সোমবার, ২০ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা

বন্ড সুবিধার অপব্যবহার

বিপন্ন হয়ে পড়ছে টেক্সটাইল শিল্প

রপ্তানিমুখী পণ্যের কাঁচামাল হিসেবে বন্ড সুবিধায় আমদানি করা সুতা ও কাপড় রাতের আঁধারে চলে যাচ্ছে পুরান ঢাকার ইসলামপুরের পাইকারি বাজারে। পোশাক শিল্পের মালিক নামধারীদের কেউ কেউ চোরাকারবারির ব্যবসায় জড়িত হয়ে দেশের টেক্সটাইল শিল্পের সর্বনাশ ডেকে আনছে। শুল্ক সুবিধায় আনা সুতা ও কাপড়ের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মার খাচ্ছে দেশীয় টেক্সটাইল শিল্প। রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাকের জন্য আমদানিকৃত সুতা ও কাপড় কালোবাজারে বিক্রি করে দেওয়ায় গত এক বছরে স্থানীয় চাহিদা পূরণের জন্য উৎপাদিত সুতা ও কাপড় মিলগুলো বিক্রি করতে পারছে না। মিথ্যা ঘোষণার মাধ্যমে আমদানি হওয়া সুতা-কাপড়সহ বিভিন্ন ড্রেস ম্যাটেরিয়াল স্থানীয় বাজারে অবাধে বিক্রি হওয়ায় এর প্রভাব দেশের রপ্তানিমুখী স্পিনিং ও উইভিং মিলগুলোতেও পড়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এ ধরনের কর্মকা- বন্ধে নানা পদক্ষেপ নিলেও চোরাকারবারিরা নানা কৌশলে রয়ে গেছে বহাল তবিয়তে। দেশের টেক্সটাইল মিলগুলো বর্তমানে শ্রমিক-কর্মচারীর বেতন, মজুরি ও অন্যান্য ইউটিলিটি ব্যয় মেটাতে উৎপাদন খরচের চেয়ে কম মূল্যে সুতা ও কাপড় বিক্রয় করছে। অনেক শিল্পপ্রতিষ্ঠান কার্যত বন্ধ থাকলেও তাদের বন্ড লাইসেন্স বিভিন্ন পন্থায় কার্যকর রেখে সুবিধা নিচ্ছে। বন্ডেড ওয়্যার হাউস লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা চিহ্নিত এবং তাদের মধ্যে কতটি চালু আছে, তা নির্ধারণ করে বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোর বন্ড লাইসেন্স বাতিল করার দাবি জানানো হয়েছে টেক্সটাইল মালিকদের পক্ষ থেকে। তাদের দাবি বন্ধ কারখানার বন্ড লাইসেন্স অপব্যবহার বন্ধ হলে দেশীয় শিল্প সুরক্ষা পাবে। বন্ড সুবিধায় আমদানিকৃত পণ্য কালোবাজারে পাচার হয়ে যাওয়ায় প্রতি বছর সরকার শত শত কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। শুধু কাপড় বা সুতা নয়, কাগজ শিল্পের জন্যও সর্বনাশ ডেকে আনছে বন্ড সুবিধায় রপ্তানিমুখী পণ্যের জন্য আমদানি করা কাগজ। কালোবাজারিরা এতটাই বেপরোয়া হয়ে উঠছে যে, তারা তাদের অপকর্মে বাদ সাধার চেষ্টা করলে শুষ্ক কর্মকর্তাদের ওপর হামলার ধৃষ্টতাও দেখাচ্ছে। কালোবাজারিদের সঙ্গে চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের সম্পর্ক থাকায় শুল্ক কর্মকর্তারা তাদের ঘাটাতে সাহস পায় না। বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে বন্ড সুবিধার অপব্যবহার রোধে সরকারকে কঠোর হতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর