শিরোনাম
মঙ্গলবার, ২১ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা

অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সুশাসন

খেলাপি নয় ভালো গ্রাহকদের পুরস্কৃত করুন

দুষ্টের দমন শিষ্টের পালন সুশাসনের মোদ্দা কথা। অর্থনৈতিক সুশাসনের ক্ষেত্রেও এর বিকল্প নেই। কিন্তু দেখে-শুনে মনে হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক শিষ্টের বদলে দুষ্টুদের প্রতিই তাদের পক্ষপাতিত্ব দেখাতে চলেছেন। দীর্ঘদিনের দেন-দরবারেও প্রকৃত ব্যবসায়ীরা যে সুবিধা পায়নি, সেই সুবিধাই ঋণখেলাপিদের উপহার দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত বৃহস্পতিবার ঋণখেলাপিদের গণসুবিধা দিয়ে যে বিশেষ নীতিমালা জারি করা হয়েছে, তাতে ঋণখেলাপিদের ঋণের সুদহার এক অঙ্কে নেমে গেছে। পাশাপাশি ঋণ পরিশোধে ১২ মাসের গ্রেস পিরিয়ডসহ টানা ১০ বছর সময় পাচ্ছে তারা। অন্যদিকে নিয়মিত ঋণ পরিশোধ করেও এক অঙ্কের সুদের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে ভালো গ্রহীতারা। দেখে শুনে মনে হচ্ছে, যারা ব্যাংক ঋণ সময়মতো শোধ করেন তাদের অযোগ্য ভাবছে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সরকার প্রধানের নির্দেশনা ছিল ব্যাংক ঋণের সুদ এক অঙ্কে নামিয়ে আনা। ব্যাংকগুলোর পক্ষ থেকে নির্দেশনা মানার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও তা মানা হয়নি। ব্যবসায়ীদের ঋণ পেতে এখন ১৪ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত সুদ গুনতে হচ্ছে। অর্থাৎ খেলাপির চেয়ে দ্বিগুণ সুদ ভালো গ্রাহকের ঘাড়ে চাপানো হয়েছে। অর্থনীতিবিদদের মতে, নিয়মিত ঋণের টাকা ফেরত দিয়ে ব্যাংক বাঁচিয়ে রাখে ভালো গ্রাহকরা। তাই ভালো গ্রাহকদের উৎসাহিত করতে স্বল্প সুদে ঋণের ব্যবস্থা এবং সুদের ওপর ১০ শতাংশ প্রণোদনা সুবিধা নিশ্চিত করলে দেশের অর্থনীতি লাভবান হবে। বর্তমানে ব্যাংকিং খাতের মোট ঋণের প্রায় ৯০ শতাংশ ভালো গ্রাহকের হাতে। তবু ভালো গ্রাহকদের প্রণোদনা দিতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর অনীহা রহস্যজনক। চার বছর আগে ভালো ঋণগ্রহীতাদের পরিশোধিত সুদের ওপর ১০ শতাংশ রিবেট সুবিধা দিয়ে সার্কুলার জারি করা হয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের সেই সার্কুলার বাস্তবায়নের কোনো উদ্যোগই নেওয়া হয়নি। ব্যাংকগুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অবস্থানে কোথায় যেন ঘাটতি আছে। দেশের ব্যাংকিং খাতকে খেলাপি ঋণের অভিশাপ থেকে বাঁচাতে তাদের শাস্তি নিশ্চিত করার পাশাপাশি ভালো গ্রাহকদের উৎসাহিত করার উদ্যোগ নেওয়া দরকার। তার বদলে ঋণখেলাপিদের জামাই আদরে লালন পালন করলে তা মন্দ লোকদের উৎসাহিত করা হবে। যা কাম্য হওয়া উচিত নয়।

 

সর্বশেষ খবর