মঙ্গলবার, ২১ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা

সাহরির গুরুত্ব ও ফজিলত

যুবায়ের আহমাদ

সাহরির গুরুত্ব ও ফজিলত

সাহরি শব্দটি এসেছে আরবি সাহার থেকে। সাহার অর্থ হলো রাতের শেষাংশ, প্রভাত বা ভোররাত। আর সাহরি হলো শেষ রাত বা ভোরের খাবার। সাহরি এক বরকতপূর্ণ খাবারের নাম যা রোজাদার রোজার আগের রাতে সুবহে সাদিকের আগে গ্রহণ করেন। সাহরি গ্রহণ করা রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এক গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত।

ইসলামে সাহরির অনেক গুরুত্ব রয়েছে। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহরি খেতেন এবং সাহাবায়ে কেরামকেও সাহরি খেতে নির্দেশ দিতেন। রোজা আগের উম্মতদের ওপরও ফরজ ছিল। কিন্তু আগের উম্মতের রোজা ও এ উম্মতের রোজার মধ্যে পার্থক্য হলো সাহরি। অর্থাৎ তারা সাহরি খেত না কিন্তু এ উম্মত সাহরি গ্রহণ করে। হজরত আমর ইবনুল আস (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমাদের সিয়াম ও আহলে কিতাবদের (ইহুদি খ্রিস্টান) সিয়ামের মধ্যে পার্থক্য হলো সাহরি খাওয়া।’ সহিহ মুসলিম। 

সাহরির যেমন গুরুত্ব রয়েছে তেমনি সাহরির ফজিলতও অনেক। আনাস ইবনু মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘তোমরা সাহরি খাও, কারণ সাহরিতে বরকত রয়েছে’। সহিহ মুসলিম। সাহরির আরেক বিশেষ ফজিলত হলো, সাহরি গ্রহণকারীদের ওপর আল্লাহতায়ালার বিশেষ রহমত বর্ষিত হয়। হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘সাহরি খাওয়া বরকত, তাই তোমরা তা ছাড়বে না; এক ঢোক পানি পান করে হলেও। কারণ যারা সাহরি খায় আল্লাহ তাদের ওপর বিশেষ রহমত নাজিল করেন এবং ফেরেশতারা সাহরি গ্রহণকারীদের জন্য বিশেষ দোয়া করতে থাকে।’ মুসনাদে আহমাদ।

সাহরির সময় হলো শেষ রাত। ফকিহ আবুল লাইস (রহ.) বলেছেন, সাহরির সময় হলো রাতের শেষ ষষ্ঠাংশ। দৈনন্দিন জীবনে ইসলাম : ৩০৫। তবে সাহরির পুরো সময়ের মধ্যে শেষ সময়ে সাহরি খাওয়া উত্তম। অর্থাৎ সাহরির পুরো সময়ের মধ্যে শেষভাগে কিন্তু সর্বশেষ সময়ের একটু আগে। এমন সময়ে খাবার গ্রহণ শুরু করা যেন সাহরির সর্বশেষ সময়ের অল্প কিছুক্ষণ আগেই খাওয়া শেষ হয়ে যায়। আর সাহরির সর্বশেষ সময় হলো সুবহে সাদিক উদিত হওয়া। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আর পানাহার কর যতক্ষণ না কালো রেখা থেকে ভোরের শুভ্র রেখা পরিষ্কার দেখা না যায়’। সূরা বাকারা : ১৮৭। এ আয়াতে সুবহে সাদিকের শুভ্র রেখা ফুটে উঠাকে সাহরির শেষ সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। সুবহে সাদিক উদিত হয়ে গেলে সামান্যও খাওয়া যাবে না।

বরকতপূর্ণ এ খাবার অল্প হলেও গ্রহণ করা উচিত। আবার সারাদিন না খেয়ে থাকতে হবে ভেবে খুব বেশি পরিমাণ খাবার গ্রহণও উচিত নয়। স্বাভাবিক খিদের সময় যে পরিমাণ খাবার গ্রহণ করা হয় তা-ই গ্রহণ করা উচিত।

লেখক : জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত কারি ও খতিব, বাইতুশ শফীক মসজিদ, বোর্ড বাজার (আ. গনি রোড), গাজীপুর।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর