রবিবার, ২৬ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা

রেলের টিকিট সোনার হরিণ

হয়রানির শিকার হচ্ছে মানুষ

স্বজনদের সঙ্গে উৎসব পালন করা বাঙালির ঐতিহ্যের অংশ। ধর্মীয় উৎসবের ক্ষেত্রেও তা এক বড় সত্যি। যে কারণে প্রতিটি ঈদে ঘরে ফেরার তাড়া শুরু হয় নগরবাসীর মধ্যে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। বাস, ট্রেন, লঞ্চ সব যানবাহনে ঈদ উপলক্ষে দেখা দেয় ঠাঁই নেই ঠাঁই নেই অবস্থা। তাই আগেভাগে বাস, লঞ্চ, ট্রেনের টিকিট কেটে ঘরমুখো মানুষ ঘরে ফেরার বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করে। মানুষের হাতের মুঠোয় রেলের টিকিট পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে চালু করা হয়েছিল রেলের ই-টিকিটিং সেবা। কিন্তু তা প্রহসনে রূপ নিয়েছে। ই-টিকিটিং সেবা না পেয়ে গত বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার কমলাপুর স্টেশনে রেলের আগাম টিকিটপ্রত্যাশীর ভিড় জনসমুদ্রে রূপ নেয়। প্রতিদিনই টিকিট নিতে কেউ লাইনে দাঁড়িয়েছেন মধ্যরাতে, কেউ বা ভোরে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিটি লাইন এঁকে বেঁকে স্টেশনের বাইরে সম্প্রসারিত হয়েছে। টিকিটপ্রত্যাশীদের অভিযোগ, অনলাইনে টিকিট কেনার জন্য চেষ্টা করে দেখেছেন সার্ভার বন্ধ। অনলাইনে কোনো টিকিট দেওয়া হচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে কাউন্টারে এসেছেন। অ্যাপে প্রবেশ করতে না পারা, পর্যাপ্ত টিকিট না থাকাসহ অনেক অভিযোগ অ্যাপ ব্যবহারকারী টিকিটপ্রত্যাশীদের। ঢাকা থেকে ৩৩টি আন্তনগর ও ৪টি বিশেষ- এই ৩৭টি ট্রেনের ১৪ হাজার ২৩৪টি টিকিট অনলাইনে কিংবা অ্যাপে বরাদ্দ রয়েছে। আর বাকি ১৩ হাজার ৯৮৬টি টিকিট বিক্রি হচ্ছে কাউন্টার থেকে। সাধারণ যাত্রীদের মনে প্রশ্ন, অনলাইনে অনেক চেষ্টার পরও কেউই টিকিট কাটতে পারছেন না, তাহলে মোট টিকিটের অর্ধেকেরও বেশি অনলাইনে বরাদ্দ থাকা টিকিটগুলো যাচ্ছে কোথায়? ঈদের আগে ই-টিকিটিং পদ্ধতিতে টিকিট কেনা নিয়ে যে অভিযোগ উঠেছে তা সত্যিকার অর্থেই গুরুতর। এ পদ্ধতির জন্য রাখা অর্ধেক টিকিটের কত অংশ স্বচ্ছভাবে হচ্ছে তা খতিয়ে দেখা উচিত। ট্রেনের টিকিটের জন্য গত কয়েক দিন ধরে রোজার মধ্যে হাজার হাজার মানুষের যে ভিড় দেখা যাচ্ছে তার এক বড় অংশ টিকিট না পেয়ে ব্যর্থ হয়ে ঘরে ফিরেছে; যা দুর্ভাগ্যজনক। স্বীকার করতেই হবে, চাহিদার তুলনায় ট্রেনের টিকিট অপ্রতুল। ফলে টিকিট বিক্রিতে কোনো ক্ষেত্রে স্বচ্ছতার ব্যত্যয় ঘটলে জনক্ষোভ দেখা দেওয়াই স্বাভাবিক। এ ব্যাপারে সবারই সতর্ক থাকা উচিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর