এশিয়া এবং বিশ্ব পরিসরের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তালিকায় নেই বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম। এক সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে বলা হতো প্রাচ্যের অক্সফোর্ড। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের মান নিয়ে গর্ব করা হতো। কিন্তু কালের বিবর্তনে এশিয়ার সেরা ৪০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায়ও নেই বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম। তবে এ তালিকায় আছে ভারতের ৭৯টি, পাকিস্তানের ৮, নেপালের ১ ও শ্রীলঙ্কার ২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টদের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, এশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয় না থাকার অনেকগুলো কারণ রয়েছে। বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রথাগত বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো চলছে না। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি ছাত্র থাকবে, বিদেশি শিক্ষক থাকবে, সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য থাকবে এবং গবেষণা থাকবে। কিন্তু এখানে এসবের নাম-গন্ধ নেই। এ ছাড়া প্রশ্ন আছে বাংলাদেশের আবাসিক হলের পরিবেশ নিয়েও। বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো অনেকটা বস্তির মতো। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পরিচ্ছন্ন মনোরম পরিবেশ থাকার কথা থাকলেও তা নেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো দেশের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়েও। বাংলাদেশে কিছু বিল্ডিংয়ে শিক্ষাদান করা শিক্ষকরা রাজনীতি নিয়েই বেশিরভাগ সময় ব্যস্ত থাকেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের মতে, নেপালের বিশ্ববিদ্যালয়ের একেকটি বিভাগ থেকে যে সংখ্যক শিক্ষার্থী আমেরিকায় যায়, বাংলাদেশ থেকেও অত শিক্ষার্থী আমেরিকায় যায় না। দেশের সবচেয়ে গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তার অবস্থাই যদি এশিয়ার সেরা ৪০০-এর মধ্যে না থাকে তবে অন্যগুলোর অবস্থা কোথায় তা সহজে অনুমেয়। জরিপকারী সংস্থাগুলোর কাছে তথ্যউপাত্ত না পাঠানোর তালিকায় বাংলাদেশের অনুপস্থিতির অন্যতম কারণ বলে কারও কারোর ধারণা। এ বিষয়টিও সমান লজ্জার। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কর্তাব্যক্তিরা রাজনীতি নিয়ে এতই ব্যস্ত থাকেন যে অন্য কোনো কিছু নিয়ে ভাবার সময় তারা পান না। যা সত্যিকার অর্থেই দুর্ভাগ্যজনক।