রবিবার, ২ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

অজ্ঞান পার্টির দৌরাত্ম্য

অপরাধ দমনে কঠোর হোন

রাজধানীসহ দেশের মহানগরীগুলোয় ঈদ সামনে রেখে অজ্ঞান পার্টির তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। বাস-লঞ্চ-ট্রেন টার্মিনালসহ জনাকীর্ণ স্থানে হকার সেজে ইফতারের আগে বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য বিক্রি করছে তারা। আর এসব খাদ্যদ্রব্যের সঙ্গে মিশিয়ে দিচ্ছে চেতনানাশক ওষুধ। ফলে এগুলো কিনে কেউ খেলেই মাশুল দিতে হচ্ছে। কখনো কখনো চেতনানাশক ওষুধের মাত্রা বেশি হলে ভিকটিম মারা যাচ্ছে। অজ্ঞান পার্টির শিকারদের কেউ কেউ স্বাভাবিক জীবনে আর ফিরতে পারছে না। ক্রমেই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী একের পর এক অজ্ঞান পার্টির সদস্যদের আটক করেও তাদের নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না। হাতে গোনা কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হলেও আদালত থেকে জামিন নিয়ে অপরাধী চক্রের সদস্যরা আবার একই কাজে জড়িয়ে পড়ছে। রাজধানী ঢাকায় বাস, লঞ্চ, রেলস্টেশনসহ অন্তত ৪০টি পয়েন্টে অজ্ঞান পার্টির শতাধিক গ্রুপ সক্রিয়। সহজ-সরল মানুষকে লক্ষ্য করে তারা ফেরিওয়ালা সেজে জুস, ডাবের পানি, খেজুর, ঝালমুড়ি, শরবতসহ নানা উপকরণ বিক্রি করছে। আর প্রতারিত মানুষ সর্বস্ব হারানোর পাশাপাশি জীবন হারানোর মতো ঝুঁকিতে পড়ছে। প্রতিদিন গড়ে অন্তত ২০ জন অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন। সহজ সরল মানুষ শুধু নয়, বুদ্ধিবৃত্তির সঙ্গে জড়িত মেধাবীরাও অজ্ঞান পার্টির শিকার হয়ে সর্বস্ব হারানোর পাশাপাশি নিজের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ঠেলে দিয়েছে এমন নজির ভূরি ভূরি। অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি এড়াতে অপরিচিত কারও দেওয়া খাবার না খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পাশাপাশি নিয়মিত অভিযান চালিয়ে তারা অজ্ঞান পার্টির সদস্যদের গ্রেফতার করছে বলেও দাবি করেছে। প্রতি বছর ঈদুল ফিতরের আগে ও ঈদুল আজহা এবং দুর্গাপূজার মৌসুমে অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা সক্রিয় হয়ে ওঠে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। অভিযোগ রয়েছে, অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা গ্রেফতার হলেও তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগে ফাঁকফোকর থাকায় আদালত থেকে অতি সহজে ছাড়া পায়। অভিজ্ঞ মহলের মতে এ ধরনের অপরাধী যাতে সহজে ছাড়া না পায় তা নিশ্চিত করতে আইনের ফাঁকফোকর বন্ধ করা দরকার। আমাদের বিশ্বাস, সরকার এ বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে নেবে। মানুষবেশী শকুন অজ্ঞান পার্টির উৎখাতকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেওয়া হবে- এমনটিও কাম্য।

সর্বশেষ খবর