সোমবার, ৩ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা

ওআইসিকে উদ্যোগী হতে হবে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ইসলামী সম্মেলন সংস্থার (ওআইসি) দেশগুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। সৌদি আরবের পবিত্র মক্কা নগরীর সাফা প্যালেসে সংস্থার চতুর্দশ শীর্ষ সম্মেলনে বক্তব্যদানকালে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সম্পদের সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা মুসলমানকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু রাখাইন অঞ্চলে একটি সহায়ক পরিবেশ তৈরির প্রতিশ্রুতি মেনে চলতে মিয়ানমার ব্যর্থ হওয়ায় রোহিঙ্গাদের সম্মানের সঙ্গে প্রত্যাবর্তন এখনো অনিশ্চিত। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের প্রতি বাংলাদেশের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি ঘোষণার বিষয়টি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বিশ্বজনীন এ সমস্যা মোকাবিলায় ওআইসির সক্রিয়তা প্রত্যাশা করেছেন। বলেছেন, অর্থনীতি ও নিরাপত্তা নিয়ে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ওআইসিকে এমন একটি কৌশল গড়ে তুলতে হবে, যাতে জোটের সদস্য দেশগুলো একে অন্যের জন্য কাজ করতে পারে। এর আগে রিয়াদ সম্মেলনে দেওয়া চারটি প্রস্তাব মক্কা সম্মেলনেও তুলে ধরেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। সেগুলো হলো- অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ, সন্ত্রাসে অর্থায়ন বন্ধ, মুসলিম উম্মাহর মধ্যে ভেদাভেদ নিরসন এবং সংলাপের মাধ্যমে দ্বন্দ্ব-সংঘাতের শান্তিপূর্ণ সমাধান। প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট সবাইকে স্মরণ করিয়ে দেন, ইসলামের আবির্ভাব হয়েছিল অন্ধকার জগতের আলোকবর্তিকা হিসেবে। কিন্তু অপব্যাখ্যার কারণে সন্ত্রাসবাদ ও সংঘাতের ভাবধারা হিসেবে ইসলামকে ভুলভাবে তুলে ধরা হচ্ছে। মক্কা শীর্ষ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য মুসলিম বিশ্বের এ সময়ের দাবিকে তুলে ধরেছে। বাংলাদেশ ঘনবসতির দেশ হওয়া সত্ত্বেও ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে মানবিক কারণে। মুসলিম বিশ্বের অন্যতম এই মানবিক সমস্যার সমাধানে অন্যান্য মুসলিম দেশকেও সহায়তার হাত বাড়াতে হবে। রোহিঙ্গারা যাতে সসম্মানে তাদের স্বদেশে ফিরতে পারে তা নিশ্চিত করতে মিয়ানমারের ওপর চাপ বাড়াতে হবে। একইভাবে মুসলিম বিশ্বে নিজেদের মধ্যে যেসব সমস্যা ও দ্বন্দ্ব রয়েছে আলোপ-আলোচনার মাধ্যমে তার সম্মানজনক সমাধানের উদ্যোগ নেওয়ার বিষয়টিও প্রাসঙ্গিকতার দাবিদার। সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সব মুসলিম দেশের অভিন্ন ভূমিকাও এখন সময়ের দাবি। কারণ ইসলাম শান্তির ধর্ম এবং আলোকবর্তিকা হিসেবে এ ধর্মের আবির্ভাব ঘটেছিল। মুসলিম অমুসলিম নির্বিশেষে যারা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের শিকার, তাদের সবার প্রতি সহমর্মিতার প্রকাশ মুসলিমদের দায়িত্ব বলে বিবেচিত হওয়া উচিত।

 

সর্বশেষ খবর