রবিবার, ৯ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

রাজধানীর নদ-নদী সুরক্ষা

সবার দায়িত্বশীল ভূমিকা কাম্য

নদ-নদীর দেশ বাংলাদেশ, এই অভিধা নিষ্প্রভ হয়ে উঠেছে নাগরিক সচেতনতার অভাব এবং দায়িত্বশীলদের দায়বোধের ঘাটতির কারণে। নদ-নদী খাল-বিল সুরক্ষার বদলে গত চার যুগে অসংখ্য প্রাকৃতিক জলাধারের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে উঠেছে। রাজধানী হিসেবে ঢাকার উত্থান ঘটেছিল বুড়িগঙ্গা নদীকে কেন্দ্র করে, এ মহানগরীর বিকাশে শীতলক্ষ্যা, তুরাগ ও বালু এই চার নদ-নদীর বিশিষ্ট ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু অপদখল আর দূষণের নির্মম ও নির্দয় শিকার হয়ে রাজধানীর ফুসফুস হিসেবে বিবেচিত চার নদ-নদী অস্তিত্ব হারাতে চলেছে। দেরিতে হলেও চার নদ-নদী সুরক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর তাগিদে সক্রিয় হয়ে উঠেছে প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট সব সিটি করপোরেশন। চলছে দখলদারদের উচ্ছেদ অভিযান। পাশাপাশি চার নদীকে দখল ও দূষণমুক্ত করতে নেওয়া হচ্ছে পরিকল্পনা। এ উদ্দেশ্যে লন্ডনের টেমস নদীর আদলে সাজানো হবে রাজধানীর চার নদ-নদী। বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু ও শীতলক্ষ্যাকে দখলমুক্ত রাখতে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় যে পরিকল্পনা নিয়েছে তার উদ্দেশ্য চিরায়ত নদ-নদীকে স্বরূপে ফেরানোর পাশাপাশি নদ-নদীর তীরে পর্যটন সুবিধা সৃষ্টি। এ লক্ষ্যে প্রণীত পথনকশায় ১৫ ধরনের পদক্ষেপের কথা বলা হয়েছে। এ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য মেগাসিটি ঢাকাকে আধুনিকতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে সময়ের উপযোগী করা। পদক্ষেপগুলো হচ্ছে পানিসম্পদের সদ্ব্যবহার। নদীতীরে দৃষ্টিনন্দন ওয়াকওয়ে নির্মাণ। সুশোভিত ফুলের বাগান তৈরি। চার নদ-নদীর চার সেতুকে দৃষ্টিনন্দন করা। নদ-নদীর তীরে অবসর সময়ে বসার জন্য শেডসহ বেঞ্চ নির্মাণ। চার নদ-নদীর দূষণরোধে ও রক্ষায় শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করা। চার নদ-নদীতে বিভিন্ন ধরনের আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা। পাঠ্যপুস্তকে নির্দিষ্ট কারিকুলাম সংযোজন। আগামীতে নদ-নদী যেন বেদখল না হয়, সে ব্যাপারে স্থানীয় জনগণকে সম্পৃক্ত করার পাশাপাশি সংবাদদাতাকে পুরস্কারের ব্যবস্থা করা। চার নদ-নদী সুরক্ষায় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় তথা সরকারের নেওয়া নানামুখী পদক্ষেপ প্রশংসার দাবিদার। তবে নদ-নদী জলাধার সুরক্ষায় কতটা সুফল দেবে তা নির্ভর করছে পরিকল্পনাগুলোর যথাযথ বাস্তবায়ন তথা সংশ্লিষ্টদের আন্তরিকতার ওপর। শুধু রাজধানীর চার নদ-নদী নয়, দেশের সব প্রাকৃতিক জলাশয় রক্ষায়ও সরকারকে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ভূমিকা পালন করতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর