শিরোনাম
সোমবার, ১০ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

কর বিড়ম্বনা

ভয় নয় আগ্রহ সৃষ্টি করতে হবে

দুনিয়ায় যেসব দেশে করদানের উপযুক্ত নাগরিকের তুলনায় করদাতার সংখ্যা অনেক কম বাংলাদেশ তার মধ্যে একটি। বাংলাদেশে চার কোটি মানুষকে করদানের যোগ্য বলে মনে করা হয়। অথচ মাত্র ৪০ লাখ লোকের টিআইএন রয়েছে। যাদের অর্ধেক মাত্র কর দেন। দেশের উন্নয়ন, সরকার পরিচালনা সব কিছু জনগণের কাছ থেকে আদায় করা করের ওপর নির্ভরশীল। আয়কর আদায়ের হার নগণ্য হওয়ায় সরকারকে প্রতি বছরই রাষ্ট্র ও সরকার পরিচালনার ব্যয় নির্বাহ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে করদাতার সংখ্যা বাড়াতে সরকার কার্যকর উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে। আসছে ২০১৯-২০ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে করদাতার সংখ্যা ৪০ লাখ থেকে ১ কোটিতে বাড়ানোর নির্দেশনা দিতে যাচ্ছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বাজেট তৈরির সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন করদাতা তৈরির ব্যাপক পরিকল্পনা থাকছে বাজেটে। এর মধ্যে অন্যতম হলো সব ফ্ল্যাট ও বাড়ি মালিককে করের আওতায় আনা। নতুন করদাতা খুঁজতে সারা দেশে বিশেষ অভিযানে নামবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এ অভিযানে রাজধানীতে ৩০ থেকে ৪০ লাখ নতুন করদাতা তৈরি করতে চায় সরকার। এর বাইরে বিভাগীয় শহর, জেলা ও উপজেলা থেকে আরও ৬০ লাখ সম্ভাব্য করদাতা সংগ্রহ করা হবে। এ জন্য জেলা ছাড়াও স্থাপন করা হবে উপজেলাভিত্তিক কর অফিস। অস্থায়ী ভিত্তিতে লোকবল নিয়োগ দিয়ে আয়করদাতাদের চিহ্নিত করা হবে। বিদ্যমান জনবলকে সর্বোচ্চ কাজে লাগানোর পাশাপাশি রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে আউটসোর্স করা হবে। এ জন্য নিয়োগ দেওয়া হবে প্রায় ১০ হাজার জনবল। অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ পাওয়া এই জনবলের সবাই হবেন বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী। দেশের সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থেই করদাতার সংখ্যা বাড়ানোর বিকল্প নেই। এক কোটি লোককে করদানের আওতায় আনা গেলে ট্যাক্স জিডিপির অনুপাত বৃদ্ধি পাবে। জনকল্যাণে বাড়তি অর্থ ব্যয়ের সুযোগ সৃষ্টি হবে। বাজেট ঘাটতিও অনেকাংশে রোধ করা সম্ভব। এ জন্য কর আদায়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের জনবান্ধব ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে। করদানের ক্ষেত্রে ভয় নয়, আগ্রহ সৃষ্টি করতে হবে। কর আদায়ের নামে কেউ যাতে হয়রানির সম্মুখীন না হয় সে বিষয়টিও দেখা জরুরি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর