শুক্রবার, ১৪ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

সর্বনাশা মানব পাচার

জনসচেতনতা গড়ে তুলুন

সাগরপথে অবৈধভাবে ইউরোপে পাড়ি জমাতে গিয়ে অভিবাসনপ্রত্যাশীর অনেকেই মারা পড়ছেন নৌকাডুবিতে। মাত্র কদিন আগে তিউনিসিয়া উপকূলে নৌকাডুবিতে মারা যান ৬৫ জন হতভাগ্য অভিবাসনপ্রত্যাশী, যার বেশির ভাগই বাংলাদেশি। এ খবর পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার পর দেশের বহু পরিবারে ওঠে কান্নার রোল। মানব পাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে ওঠে বিভিন্ন মহল। কিন্তু তা যে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মধ্যে খুব একটা প্রতিক্রিয়া ফেলাতে পারেনি তার প্রমাণ এখনো চলছে মানব পাচারের ঘটনা। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থা রেডক্রসের বরাত দিয়ে বলেছে, উত্তর আফ্রিকার দেশ তিউনিসিয়া কর্তৃপক্ষ অভিবাসনপ্রত্যাশী-বোঝাই একটি উদ্ধারকারী নৌকাকে সে দেশের উপকূলে ভিড়তে অনুমতি দেয়নি। ফলে ১২ দিন ধরে সাগরে ভাসছেন ৭৫ অভিবাসী, যার ৬৪ জনই বাংলাদেশি। একটি মিসরীয় নৌকা তিউনিসিয়ার জলসীমায় তাদের উদ্ধার করে। দেশটির সরকারি কর্তৃপক্ষ বলছে, তাদের অভিবাসন কেন্দ্রগুলোয় ধারণক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি অভিবাসী রয়েছে। তাই নতুন করে তাদের আশ্রয় দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। উপকূলীয় শহর জারজিস থেকে ১২৫ কিলোমিটার দূরে খোলা সাগরে নৌকাটি এখন অবস্থান করছে। অভিবাসীরা ইউরোপে প্রবেশের জন্য লিবিয়ার উপকূল থেকে যাত্রা করেছিলেন। ১২ দিন ধরে সাগরে ভাসার ফলে তাদের শারীরিক অবস্থার চরম অবনতি ঘটেছে। প্রসঙ্গত, আফ্রিকান অভিবাসীরা ইউরোপে প্রবেশের জন্য লিবিয়ার পশ্চিম তীর ব্যবহার করেন। মানব পাচারকারীদের মোটা অর্থ দিয়ে ইউরোপের উদ্দেশে নৌকায় যাত্রা করেন তারা। জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) তথ্যানুযায়ী ২০১৯ সালের প্রথম চার মাসে এ পথে ১৬৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। সাগরপথে অবৈধভাবে ইউরোপ পাড়ি দিতে গিয়ে ৬৪ বাংলাদেশিসহ যে ৭৫ জন অভিবাসী সাগরে ভাসছেন, তাদের জীবন এখন হুমকির মুখে। দৃশ্যত অভিবাসী হওয়া নতুবা মৃত্যুর পথ বেছে নেওয়া এমন ঝুঁকি নিয়ে তারা যে সাগর পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করছেন তা স্পষ্ট। সাগরে ভাসমান নৌকার বেশির ভাগ যাত্রীই যেহেতু বাংলাদেশি নাগরিক সেহেতু তাদের উদ্ধারে সরকার সক্রিয় হবেÑ আমরা এমনটিই আশা করতে চাই। পাশাপাশি মানব পাচারের ঘটনা রোধে ব্যাপক জনসচেতনতা গড়ে তোলার বিষয়টিও জরুরি। জীবিকার প্রশ্নটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ তবে জীবনকে হুমকির মুখে ফেলে অভিবাসী হওয়ার চেষ্টা হঠকারিতার শামিল।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর