শনিবার, ১৫ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

আম চাষিরা হতাশ

প্রক্রিয়াজাত কারখানা স্থাপন জরুরি

আম নিয়ে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। সারা বছর অর্থ আর শ্রম ব্যয় করে তারা যে আম ফলিয়েছেন তার ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না। এ বছর দেশে রেকর্ড পরিমাণ আম উৎপাদিত হয়েছে। সাধারণ মানুষের জন্য আম সহজপ্রাপ্য হয়েছে বাড়তি উৎপাদনের সুযোগে। কিন্তু আমের বাজারে ক্রেতা নেই। আম বাজারে ওঠার শুরুতে কেমিক্যাল দিয়ে পাকানোর অভিযোগে বিপুল পরিমাণ আম নষ্ট করার ঘটনা নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। ভোক্তাদের কারও কারও মনে ঢুকেছে কেমিক্যাল ভয়। ফলে যে হারে আম বিক্রি হওয়ার কথা সে হারে বিক্রি হচ্ছে না। যে দামে কৃষক আম বিক্রি করছেন তাতে উৎপাদন খরচ ওঠানোই কঠিন হয়ে পড়ছে। এ অবস্থার জন্য অনেকাংশে দায়ী নেতিবাচক প্রচার। কান চিলে নিয়ে গেছেÑ এই হাঁকডাকে কানে হাত না দিয়ে চিলের পেছনে ছোটাছুটির মতো লোকের অভাব এ দেশে কখনো কম ছিল না। যেসব আম কেমিক্যাল দিয়ে পাকানো বলে অভিযোগ করা হয়েছে, যেসব মহাবিশেষজ্ঞ কর্মকর্তা ঘটা করে অভিযান চালিয়ে আম আটক করে তা নষ্ট করেছেন তাদের কাছে কেমিক্যাল পরীক্ষার কোনো যন্ত্রই ছিল না। কেমিক্যাল দিয়ে আম পাকালে তা বিষাক্ত হয় এটিও সর্বাংশে সত্য নয়। গত দুই বছরের মতো এবারও নেতিবাচক প্রচারের কারণে আম কেনার ব্যাপারে সংশয়ে ভুগছেন, যা আম চাষিদের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তিতে ছাই ঢেলেছে। আম উৎপাদন বাড়লেও আম প্রক্রিয়াজাতকরণের শিল্প সেভাবে গড়ে না ওঠায় উৎপাদিত আম কৃষককে বিপাকে ফেলেছে; যা আগামী বছরগুলোয় আম চাষে অনীহা সৃষ্টি করলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। দেশের আম উৎপাদনকারী এলাকায় আম প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা গড়ে উঠলে এ সমস্যার ইতি ঘটবে। বিশেষ করে আমসত্ত্ব তৈরির মাধ্যমে তা সারা বছর সংরক্ষণ এবং দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করাও সম্ভব হবে। ধান, আলু, আম চাষিরা বাড়তি ফসল উৎপাদন করে প্রায়ই ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হবে এটি কোনো শুভলক্ষণ নয়। দেশের কৃষি উৎপাদনে মদদ জোগাতে কৃষককে কীভাবে টিকিয়ে রাখা যায় সে বিষয়েও ভাবতে হবে। তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা খুবই জরুরি। পাশাপাশি কৃষিপণ্যের নেতিবাচক প্রচারের ব্যাপারে সবারই সতর্ক থাকা উচিত। আমরা আশা করব, আম চাষে উৎসাহ জোগাতে আম উৎপাদনকারী এলাকায় পরবর্তী আম মৌসুমের আগেই প্রক্রিয়াজাত কারখানা গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর