রবিবার, ২৩ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

আটকে পড়া পাকিস্তানি

পুনর্বাসনে আন্তর্জাতিক সহায়তা কাম্য

আটকে পড়া পাকিস্তানিরা দেশের আইনশৃঙ্খলা ও জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে বিবেচিত হচ্ছে চার যুগ ধরে। মুক্তিযুদ্ধের সময় দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর চোখ ও কানের ভূমিকা পালন করেছে ভারত থেকে আসা উর্দুভাষী এই জনগোষ্ঠী। গণহত্যায়ও মদদ জুগিয়েছে। পাকিস্তান বাহিনীর আত্মসমর্পণের পরও তারা তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। দেশের মাদক ব্যবসায় আটকে পড়া পাকিস্তানিদের বড় মাপের হিস্যা রয়েছে। এ দেশের মাটিতে মানুষ হলেও বিহারি নামে পরিচিত জনগোষ্ঠী কখনো এ দেশকে নিজেদের বলে ভাবতে পারেনি। এই জনগোষ্ঠীর সদস্যরা জঙ্গি তৎপরতায় জড়িয়ে পড়তে পারে এমন আশঙ্কাও বিদ্যমান। মনে করা হয়, আটকে পড়া পাকিস্তানির সংখ্যা ১০ লাখের বেশি। এর একাংশ বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর সঙ্গে মিশে গেলেও যারা ক্যাম্পের জীবনযাপন করছেন চার যুগ ধরে তাদের সংখ্যাও ৫ লাখের বেশি। পাকিস্তান বাংলাদেশে তাদের আটকে পড়া নাগরিকদের ব্যাপারে কোনো ধরনের দায়দায়িত্ব পালন করতে নারাজ। একসময় তাদের স্বদেশে ফেরত নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও এখন তারা নীরব। ফলে ঢাকার মোহাম্মদপুর, মিরপুরের ক্যাম্পসহ দেশের যেসব এলাকায় আটকে পড়া পাকিস্তানিদের অবস্থান রয়েছে, সেখানকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নাজুক হয়ে উঠছে। আটকে পড়া পাকিস্তানিদের ক্যাম্প মানেই মাদক ব্যবসার আখড়া, এটি একটি ওপেন সিক্রেট। স্বল্প জায়গায় বিপুলসংখ্যক মানুষের বসবাস মানবিক সমস্যারও উদ্ভব ঘটাচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় বৈরী ভূমিকায় অবতীর্ণ হলেও সন্দেহ নেই আটকে পড়া পাকিস্তানিরা এখন একটি মানবিক সমস্যায় পরিণত হয়েছে। পাকিস্তান সরকার তাদের নাগরিকদের স্বদেশে ফিরিয়ে নিলে বাংলাদেশ বৈরী মনোভাবাপন্ন বিপুলসংখ্যক মানুষের বোঝা থেকে মুক্তি পেত। মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধের বিপদ থেকে রক্ষা পেত বাংলাদেশের মানুষ। চার যুগ পর আটকে পড়া পাকিস্তানিদের এক বড় অংশ স্বদেশে ফিরে যেতে অনিচ্ছুক। আর বাংলাদেশে আটকে পড়া স্বদেশিদের প্রতি পাকিস্তান সরকারের দায়হীন মনোভাবও স্পষ্ট। বাঙালিদের বিরুদ্ধে তথাকথিত বিহারিদের যথেচ্ছভাবে ব্যবহার করলেও এখন তাদের দায় নিতে চাচ্ছে না পাকিস্তান সরকার। এই প্রেক্ষাপটে আটকে পড়া পাকিস্তানিদের পুনর্বাসনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এগিয়ে আসা উচিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর