মঙ্গলবার, ২৫ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান

আসিয়ানের বিবৃতি প্রশংসনীয়

রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই ও সমন্বিত সমাধান চেয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর জোট আসিয়ান। রবিবার ব্যাংককে ৩৪তম শীর্ষ বৈঠক শেষে প্রকাশিত বিবৃতিতে সংস্থাটি এই ব্যতিক্রমধর্মী বিবৃতিটি দিয়েছে। আসিয়ান দেশগুলো পরস্পরের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নাক না গলানোর নীতি অনুসরণ করে। রোহিঙ্গা ইস্যু সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট প্রত্যাশা ব্যক্ত করে আসিয়ান নেতৃত্ব নিশ্চিত করেছেন এটি নিছক মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয় নয়। আসিয়ানের বিবৃতিতে অবশ্য মিয়ানমার সরকারের ভূমিকার প্রকাশ্যে কোনো সমালোচনা করা হয়নি। একইভাবে মিয়ানমারের অবস্থানের সঙ্গে সংগতি রেখে ‘রোহিঙ্গা’ শব্দের বদলে ‘বাস্তুচ্যুত ব্যক্তি’ বলা হয়েছে। আসিয়ান চেয়ারম্যান প্রায়ুথ চান ওচা শীর্ষ সম্মেলন শেষে জোটের নেতাদের পক্ষে বিবৃতিতে বলেছেন, রাখাইন রাজ্যের সব সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এবং বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের নিরাপত্তা, সুরক্ষা ও সম্মানের সঙ্গে স্বেচ্ছায় ফেরানোর ব্যাপারে যতটা সম্ভব কার্যকর সহায়তা দেওয়ার ব্যাপারে আমরা জোর দিয়েছি এবং এ ক্ষেত্রে মিয়ানমারের অঙ্গীকারকে সমর্থন জানিয়েছি। রাখাইন থেকে বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় সহায়তা করতে বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমারের কার্যকর ও অব্যাহত আলোচনা দেখার প্রত্যাশা জানিয়েছেন আসিয়ান নেতারা। একই সঙ্গে তারা জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনারের দফতর ও জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির সঙ্গে মিয়ানমারের সমঝোতা স্মারকের পূর্ণ বাস্তবায়নের ওপর জোর দিয়েছেন। বিবৃতিতে আসিয়ান চেয়ারম্যান বলেছেন, সংঘাতের মূল কারণগুলোর সমন্বিত ও টেকসই সমাধান বের করা এবং ক্ষতিগ্রস্ত সম্প্রদায়গুলোর পুনর্বাসনের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির ওপর আমরা জোর দিয়েছি। রোহিঙ্গা ইস্যু সম্পর্কে আসিয়ানের বিবৃতিটি একটি আশাজাগানিয়া ঘটনা। বাংলাদেশ এ সমস্যার সমাধানে আসিয়ানের ভূমিকা আশা করছিল। বিবৃতির মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রত্যাশাই পূরণ করা হয়েছে। শীর্ষ সম্মেলনে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ ও ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদো রাখাইনে ফেরার পর রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়েছেন। রোহিঙ্গা ইস্যুর শান্তিপূর্ণ সমাধানের ক্ষেত্রে আসিয়ানের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে আশা করছে বাংলাদেশ। মিয়ানমারের দুই ঘনিষ্ঠ মিত্র চীন ও ভারতের অবস্থানও সমস্যার দ্রুত নিষ্পত্তি নিশ্চিত করতে পারে। আশা করা হচ্ছে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন চীন সফরকালে এ বিষয়ে বন্ধু দেশটির বাড়তি ভূমিকা নিশ্চিত করা হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর