বুধবার, ২৬ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

হাই কোর্টে ঋণখেলাপি তালিকা

জনগণের টাকা আদায়ের পথ রচিত হোক

অবশেষে ঋণখেলাপির তালিকা হাই কোর্টে পেশ করা হয়েছে। তালিকা অনুযায়ী বর্তমানে খেলাপি ও অকার্যকর ঋণের পরিমাণ ২ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা। বাকি ১ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকার মধ্যে বিভিন্ন আদালতের আদেশে আটকে আছে ৮০ হাজার কোটি টাকা। আর অবলোপনকৃত ঋণের পরিমাণ ৩০ হাজার কোটি টাকা। সোমবার বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চে এমন তথ্য উপস্থাপন করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তিনি খেলাপি ঋণের তথ্য আদালতে সিলগালা অবস্থায় উপস্থাপন করেন। তবে কোন কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ঋণখেলাপি তা আদালতে প্রকাশ্যে জানানো হয়নি। পরে মোট ঋণের ২ শতাংশ এককালীন জমা দিয়ে একজন ঋণখেলাপি ১০ বছরের জন্য ঋণ পুনঃ তফসিলের সুযোগ পাবেন (বিশেষ সুবিধা), বাংলাদেশ ব্যাংকের এমন নীতিমালার কার্যক্রমের ওপর ইতিপূর্বে দেওয়া স্থিতাবস্থার মেয়াদ আরও দুই মাসের জন্য বাড়িয়েছে আদালত। একই সঙ্গে এ বিষয়ে জারি করা রুলের শুনানির জন্য উভয় পক্ষকে প্রস্তুত হতে বলেছে হাই কোর্ট। স্মর্তব্য, হাই কোর্ট ১৩ ফেব্রুয়ারি এক আদেশবলে ঋণখেলাপির তালিকা দাখিলের নির্দেশ দেয় এবং একই সঙ্গে রুল জারি করে। হাই কোর্টের দেওয়া রুলে আর্থিক খাতের অনিয়ম, দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা বন্ধে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাস উদ্দিন, ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহীম খালেদ, সিটি ব্যাংকের সাবেক সিইও মামুন রশিদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন প্রতিনিধি ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন প্রতিনিধির সমন্বয়ে কমিশন গঠনের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং এই কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে নাÑ তাও জানতে চাওয়া হয়। হাই কোর্টে ঋণখেলাপির তালিকা পেশকে তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা হিসেবে দেখা হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, ঋণখেলাপিদের এতকাল খুঁটির জোরে ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকলেও উচ্চ আদালতের কল্যাণে জবাবদিহির সম্মুখীন হবে। ব্যাংক থেকে নেওয়া জনগণের টাকা ফেরত পাওয়ার পথ রচিত হবে।

সর্বশেষ খবর