বুধবার, ৩ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

ওরা রাজনীতির কেউ নয়

দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান

রাজনীতি হলো রাষ্ট্র পরিচালনার বিজ্ঞান। এর সঙ্গে সম্পর্ক দেশপ্রেমের, দেশের মানুষের প্রতি মমত্ববোধের। দেশ ও জনগণের কল্যাণে নিবেদিত হওয়ার মাধ্যমই হলো রাজনীতি। মেধা ও মননশীলতা রাজনীতির মূলধন হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এর সঙ্গে দুর্বৃত্তপনার দূরতম সম্পর্ক থাকারও কথা নয়। কিন্তু রাজনীতিবিদদের একাংশ নিজেদের প্রভাব বিস্তার করতে গিয়ে দুর্বৃত্তদের প্রশ্রয় দেওয়ার অপকৌশল গ্রহণ করায় রাজনীতিতে দুর্বৃত্তদের করাল গ্রাস নেমে এসেছে। দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতি সমাজ ও দেশের পরিবেশকে বিষিয়ে তুলছে। দুর্বৃত্তরা যখন যে দল সরকারে থাকে সেই দলের সাইনবোর্ডের নিচে অবস্থানের চেষ্টা করে। ব্যক্তি স্বার্থে রাজনৈতিক নেতাদের কেউ কেউ তাদের মদদও জোগান। এ অপকর্মের মাধ্যমে তারা দলের সুনামকে জিম্মি করে ফেলেন। সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় সামাজিক অপরাধ বৃদ্ধি পাওয়ার পেছনে দুর্বৃত্তায়নের থাবা অনেকাংশে দায়ী। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, দেশ ও জাতির মুক্তিসংগ্রামে নেতৃত্বদানকারী আওয়ামী লীগও অস্বস্তিতে ভুগছে দুর্বৃত্তদের প্রতি দলের কোনো কোনো নেতার কা-জ্ঞানহীন প্রশ্রয়ের কারণে। আশার কথা এ ব্যাপারে ক্ষমতাসীন দল কঠোর মনোভাব গ্রহণ করার ইঙ্গিত দিয়েছে। দলের যেসব নেতা-কর্মী ক্ষমতার অপপ্রয়োগ ও মাদক ব্যবসায় জড়িত এবং সামাজিক অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তাদের তালিকা তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দলের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী চীন সফর শেষে দেশে ফিরে অপকর্মকারী ও তাদের মদদদাতাদের বিরুদ্ধে দলীয়ভাবে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন অপরাধী যে-ই হোক তাকে শাস্তি পেতে হবে। যে যত প্রভাবশালী এমপি মন্ত্রী নেতা হোক রেহাই পাবেন না। অতীতেও কাউকে ছাড় দেওয়া হয়নি। একের পর এক সামাজিক অস্থিরতার ঘটনায় সরকারি দলের কোনো কোনো নেতার সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ যখন জোরেশোরে উচ্চারিত হচ্ছে তখন প্রধানমন্ত্রী তথা আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর এ দৃঢ় অবস্থান প্রশংসার দাবিদার। আমরা আশা করব মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দলের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি ও সুনাম রক্ষায় দুর্বৃত্তপনার সঙ্গে জড়িতদের দল থেকে বহিষ্কার শুধু নয় তাদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপও নেওয়া হবে। অন্যান্য দলগুলোও দুর্বৃত্তপনার বিরুদ্ধে কঠোর হবে এমনটিই কাম্য। রাজনীতিকে কুলষমুক্ত করা সম্ভব হলে জনগণের কাছে রাজনৈতিক নেতাদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর