বৃহস্পতিবার, ৪ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

হজযাত্রীরা মহান আল্লাহর মেহমান

মুফতি মুহাম্মদ আল আমিন

হজযাত্রীরা মহান আল্লাহর মেহমান

আল্লা­­হর হুকুম হিসেবে আমরা যেসব ইবাদত করি তা সাধারণত তিন ধরনের। ১. শারীরিক ইবাদত। যেমন নামাজ, রোজা ইত্যাদি। এখানে আর্থিক কোনো বিষয় নেই। শুধু শারীরিক পরিশ্রম রয়েছে। ২. আর্থিক ইবাদত। যেমন জাকাত দেওয়া। এখানে শারীরিক কোনো পরিশ্রম নেই। শুধু অর্থ ব্যয় রয়েছে। ৩. শারীরিক ও আর্থিক উভয়টি। অর্থাৎ এমন কিছু ইবাদত রয়েেেছ যাতে আর্থিক ইবাদতের সঙ্গে সঙ্গে শারীরিক পরিশ্রমও জড়িত। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে হজ। এতে একদিকে যেমন অর্থ ব্যয় রয়েছে তেমনি রয়েছে দীর্ঘ সময় ধরে কঠোর পরিশ্রম। হজের বিধানগুলো সুন্নত তরিকা অনুযায়ী আদায় করা এতটাই কঠিন ও কষ্টসাধ্য যা দুর্বল মুসলমানের পক্ষে সাধারণত সম্ভব হয় না। আর্থিক ও শারীরিক উভয় প্রকার ইবাদত হজের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকায় অন্যান্য ইবাদতের তুলনায় এটি অধিক গুরুত্বপূর্ণ ও মর্যাদাসম্পন্ন। মহান আল্লাহর  নেকট্যলাভেরও কার্যকর মাধ্যম। আল কোরআনে আল্লাহ হজের আবশ্যকতা সম্পর্কে ঘোষণা করেন, ‘মানুষের পক্ষে আল্লাহর উদ্দেশ্যে হজ করা ফরজ, যার পথের সামর্থ্য আছে।’ সূরা আলে ইমরান, আয়াত ৯৭। অর্থাৎ যে ব্যক্তি হজে যাওয়া-আসার যাবতীয় ব্যয় বহন করতে সামর্থ্য রাখে এবং শারীরিকভাবেও হজের আহকামগুলো পালন করতে সক্ষম তার ওপর হজ ফরজ। তবে সে ফিরে আসা পর্যন্ত তার পরিবারের ব্যয়ভারের ব্যবস্থা করে যেতে হবে। এমন যেন না হয় যে সে হজে গেলে তার স্ত্রী ও নাবালগ সন্তানরা খাওয়া-পরায় কষ্ট করবে। পুরুষের মতো নারীদের মধ্যে যারা সামর্থ্যবতী তাদের ওপরও হজ ফরজ। তবে নারীদের জন্য হজে যাওয়ার আরেকটি অতিরিক্ত শর্ত রয়েছে। তা হলো মাহরাম পুরুষের সঙ্গে যেতে হবে। মাহরাম পুরুষ হলো নারীদের বিশ্বস্ত অভিভাবক। যেমন নিজের স্বামী, বাবা, ছেলে, আপন ভাই ইত্যাদি।  ইসলামের এ ফরজ হুকুম পালন করার জন্য যারা রওনা করে তারা আল্লাহর মেহমান। আল্লাহর প্রতিনিধি। এ বিষয়ে বিখ্যাত সাহাবি হজরত আবু হোরায়রা (রা.) বলেন, আমি রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, ‘আল্ল­­াহর প্রতিনিধি হলো তিন ব্যক্তি। হাজী, গাজী ও ওমরাহকারী।’ বায়হাকি, নাসায়ি।

            লেখক : খতিব, সমিতি বাজার

মসজিদ, নাখালপাড়া, ঢাকা।

সর্বশেষ খবর