বৃহস্পতিবার, ৪ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

বাংলাদেশের উন্নয়ন কৌশল

সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব এবং বিশ্বস্ততা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীনের ডালিয়ানে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের সভায় বলেছেন, বাংলাদেশ বিদেশি অর্থায়নে বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করলেও বৈদেশিক ঋণের ফাঁদে যাতে না পড়ে সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখছে। তিনি স্পষ্টভাবে বলেছেন, তার সময়ে বাংলাদেশ কখনই ঋণের ফাঁদে পড়বে না। ভারত, চীন, জাপানসহ সব দেশের সঙ্গেই বাংলাদেশ অত্যন্ত সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে এই তথ্য জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিনিয়োগ নিয়ে কারও সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো সমস্যা হচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল নিয়ে তার পাঁচটি প্রস্তাব উত্থাপন করে বলেন, সব দেশের সঙ্গে শান্তি, সম্প্রীতি ও স্থিতিশীলতার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। পারস্পরিক আস্থা ও সম্মানের ভিত্তিতে সম্পর্ক গড়তে হবে। সবাইকে নিয়েই উন্নয়ন হতে হবে। প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করতে হবে, শত্রুতা নয়। বাংলাদেশ তৃতীয় কোনো পক্ষের সহযোগিতা না নিয়ে ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা বিরোধের নিষ্পত্তি করেছে। ভারতের সঙ্গে গঙ্গার পানি বণ্টন ও স্থলসীমান্ত চুক্তি করেছে। আজকের বিশ্ব একটি গ্লোবাল ভিলেজ। প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে কিছুটা সমস্যা থাকতে পারে, তবে আলোচনার মাধ্যমে বন্ধুত্বপূর্ণ দ্বিপক্ষীয়ভাবে সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হয়। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য যে কোনো দেশের উন্নয়নে অনুসরণযোগ্য কৌশল হিসেবে বিবেচিত হওয়ার দাবি রাখে। বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানিপণ্য তৈরি পোশাক। বিশ্ববাজারে এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী চীন। অথচ ব্যবসা ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা সত্ত্বেও বাংলাদেশ চীনের সঙ্গে সহযোগিতার অনুকরণযোগ্য সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। চীন এখন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক সহযোগী। বাংলাদেশের উন্নয়নে বাংলাদেশ যেমন প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে বিশ্বস্ততার সম্পর্ক রক্ষা করে চলেছে, তেমন চীন-জাপানসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কও অকপট। ফলে সব দেশ বাংলাদেশে বিনিয়োগের ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে উঠছে। সুসম্পর্ক রক্ষার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের কৌশল অন্য দেশগুলোর জন্য অনুকরণীয় হয়ে উঠছে। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ প্রতিবেশী মিয়ানমারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার নীতি গ্রহণ করেছে। সংঘাত এড়িয়ে কীভাবে এ সমস্যার সমাধান পাওয়া যায়, সে পথে হাঁটছে। এশিয়ায় শান্তি, উন্নয়ন ও সহযোগিতার পরিবেশ রচনায় বাংলাদেশ সবার জন্য অনুকরণীয় মডেলে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশের উন্নয়ন সাফল্যের পেছনেও সবাইকে বন্ধু ভাবার ঔদার্যতা নিয়ামক হিসেবে কাজ করছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর