শুক্রবার, ৫ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

শেখ হাসিনার ট্রেনে গুলি

২৫ বছর পর এলো মামলার রায়

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন বিরোধী দলের নেতা তখন তাকে বহনকারী ট্রেনে গুলি চালানো হয় পাবনার ঈশ্বরদীতে। কলঙ্কজনক সেই ঘটনাটি ঘটেছিল ১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ট্রেন মার্চের কর্মসূচি দিয়েছিলেন তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা। খুলনা থেকে সৈয়দপুর যাওয়ার পথে ঈশ্বরদীতে যাত্রাবিরতির সময় তার ট্রেনের কামরা লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণের ঘটনায় স্তম্ভিত হয়ে পড়ে দেশের মানুষ। এ ঘটনার পর জিআরপির তৎকালীন ওসি বাদী হয়ে মামলাও করেন। কিন্তু বিএনপি শাসনামলে সে মামলার তদন্ত এগোয়নি রহস্যজনক কারণে। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর পুলিশ মামলাটি পুনঃ তদন্ত করে। তদন্ত শেষে ঈশ্বরদীর বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলের নেতা-কর্মীসহ ৫২ জনকে এ মামলায় আসামি করা হয়। মামলা দায়েরের পরের বছর পুলিশ কোনো সাক্ষী না পেয়ে আদালতে চূড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করে। আদালত চূড়ান্ত রিপোর্ট গ্রহণ না করে অধিকতর তদন্তের জন্য মামলাটি সিআইডিতে স্থানান্তর করে। পরে সিআইডি তদন্ত শেষে ৫২ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করে। দীর্ঘ ২৫ বছর পর গত বুধবার পাবনার স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-৩-এর ভারপ্রাপ্ত বিচারক, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. রুস্তম আলী ওই মামলার রায়ে নয়জনকে মৃত্যুদ-, ২৫ জনকে যাবজ্জীবন ও ১৩ জনকে ১০ বছর করে কারাদ-ের রায় দেন। ১৯৯৪ সালে বিরোধীদলীয় নেতার ট্রেন লক্ষ্য করে বেপরোয়া গুলিবর্ষণের ঘটনা ছিল গণতন্ত্রের জন্য এক বিসংবাদ। বিরোধীদলীয় নেতার ওপর হামলার এ ঘটনার তদন্ত থেমে থাকার বিষয়টিও ছিল সমানভাবে লজ্জাজনক। ২৫ বছর পর হলেও আদালতের এ রায়ের মাধ্যমে অপরাধীদের শাস্তি পেতে হলো। স্মর্তব্য, বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে অন্তত ১৯ বার হত্যা চেষ্টার সম্মুখীন হতে হয়েছে। এসব হামলায় বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মীর হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, বেশ কয়েকটি হত্যা চেষ্টার ঘটনায় উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের জড়ানোর অপচেষ্টাও করা হয়েছে। ঈশ্বরদীতে ট্রেনে গুলিবর্ষণের মামলায় আসামিপক্ষ উচ্চ আদালতে আপিল করার ঘোষণা দিয়েছেন। আমরা আশা করব, হত্যা-ষড়যন্ত্রের ইতি ঘটাতে এ ধরনের সব মামলার বিচারিক কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন করা হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর