শিরোনাম
শনিবার, ৬ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

পশু মোটাতাজাকরণ

নিষিদ্ধ হরমোন ব্যবহার বন্ধ হোক

ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে কোরবানির পশু মোটাতাজা করার প্রক্রিয়া। অনেকে প্রাকৃতিকভাবে পশু মোটাতাজাকরণের পদ্ধতি অনুসরণ করলেও অসাধু খামারিরা গত কয়েক বছরের মতো নিষিদ্ধ ডাইক্লোফেন ও স্টেরয়েড হরমোন প্রয়োগ করছে। এসব পশুর মাংস মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। একশ্রেণির লোভী মানুষের কাছে জনস্বাস্থ্য কীভাবে জিম্মি হয়ে পড়ছে পশু মোটাজাতাকরণে ক্ষতিকর হরমোনের ব্যবহার তারই প্রমাণ। এক যুগ ধরে নিষিদ্ধ ওষুধ প্রয়োগ করে গরু-ছাগল তাজাকরণের চেষ্টা চলছে ব্যাপকভাবে। স্টেরয়েড জাতীয় হরমোনের কল্যাণে গরু-ছাগল মোটা করে তা দ্বিগুণ কিংবা তিনগুণ দামে বিক্রি করা হচ্ছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের মতে, স্টেরয়েড দ্বারা মোটাতাজাকৃত পশুর মাংস খেলে উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিস, ধমনি বিকল হয়ে হৃদরোগ এমনকি ব্রেনস্ট্রোকও হতে পারে। এ ধরনের পশুর মাংস খেলে কিডনি ও লিভার বিকলসহ পঙ্গুত্বের আশঙ্কাও থাকে। এমনিতেই আমাদের দেশের জনমনে ভুল ধারণা রয়েছে, কোরবানির মাংস বেশি খেলে তাতে কোনো ক্ষতি হয় না। এ ভুল ধারণার কারণে কোরবানির ঈদের সময় হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বাড়ে। বেশি মাংস খেয়ে পেটের পীড়া এমনকি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েও কেউ কেউ হাসপাতালে ভর্তি হন। কোরবানির পশু বিশেষ করে গরু কেনার সময় ক্রেতারা সতর্ক থাকলে অবশ্য এ বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। প্রাকৃতিকভাবে মোটাতাজা গরুর পাঁজরের হাড় দেখা যায় এবং দুই হাড়ের মধ্যে একটা ঢেউয়ের ভাব থাকে। কৃত্রিমভাবে মোটাতাজা করা গরুর মাংসল স্থানে আঙ্গুল দিয়ে চাপ দিলে অনেক দেবে যায় যা স্বাভাবিক গরুর ক্ষেত্রে হয় না। কৃত্রিমভাবে মোটা করা গরুর মধ্যে ঝিমানো ভাব থাকে, তা স্বাভাবিক গরুর ক্ষেত্রে থাকে না। উচ্চ আদালত হরমোন প্রয়োগে গরু মোটাতাজাকরণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলেও তা বাস্তবায়নের দায়িত্ব যাদের তাদের অবহেলায় অবৈধভাবে পশু মোটাতাজাকরণ বন্ধ হয়নি। আমরা আশা করব, জনস্বার্থে এ নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে প্রশাসন সবকিছুই করবে এবং এটিকে তাদের নৈতিক কর্তব্য হিসেবে ভাববে।  যারা অবৈধভাবে পশু মোটাতাজাকরণের প্রক্রিয়ায় জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে প্রশাসন এবং স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধিরা এগিয়ে আসবেনÑআমরা তা দেখতে চাই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর