শিরোনাম
রবিবার, ৭ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

প্যাথলজি টেস্টে যথেচ্ছতা

সরকারের কড়া নজর কাম্য

আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতিতে প্যাথলজি টেস্টের ভূমিকা অপরিসীম। রোগ নির্ণয়ে চিকিৎসকরা বিভিন্ন ধরনের প্যাথলজি টেস্টের পরামর্শ দেন। অথচ আমাদের দেশে প্যাথলজি টেস্টের নামে চলছে নৈরাজ্য এবং এর ফলে দেশের চিকিৎসাব্যবস্থা সম্পর্কে মানুষের আস্থা শিকেয় উঠেছে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য পরীক্ষায় সরকার নির্ধারিত মূল্য তালিকা না থাকায় ইচ্ছামতো ফি নিচ্ছে হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো। প্যাথলজি টেস্টের মান নিয়েও রয়েছে অভিযোগ। নিজস্ব ল্যাবরেটরি না থাকলেও নমুনা সংগ্রহ করে অন্য প্যাথলজিতে টেস্ট করিয়ে রিপোর্ট সরবরাহ করা হচ্ছে। ভুল আর অসংগতিতে ভরা রিপোর্টের কারণেও দেশের স্বাস্থ্যসেবার প্রতি আস্থা হারাচ্ছে মানুষ। অনেক চিকিৎসক কারণে-অকারণে রোগীদের পাঠান তাদের পছন্দনীয় ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। এসব ক্লিনিক থেকে কমিশন ঢুকছে রেফারেন্স প্রদানকারী চিকিৎসকের পকেটে। এ কমিশনের বাড়তি টাকা আদায় করা হচ্ছে রোগীদের কাছ থেকে। নামসর্বস্ব ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভুয়া রিপোর্ট তৈরি করায় দেশের চিকিৎসাসেবার প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠছে। চিকিৎসাসেবা পেতে ভারত, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর পাড়ি জমাচ্ছে মানুষ। নিজস্ব ল্যাবরেটরি না থাকলেও নমুনা সংগ্রহ করে অন্য প্যাথলজিতে টেস্ট করিয়ে রিপোর্ট সরবরাহ করার ক্ষেত্রে ঘটছে হরেক বিচ্যুতি। সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে একই ধরনের টেস্টের জন্য ২-৩ গুণ এমনকি ২০ গুণ ফি নেওয়ার তথ্যও প্রকাশ পেয়েছে সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদনে। সবচেয়ে আপত্তিকর হলো দেশে মানসম্মত ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সংখ্যা একেবারে কম। ফলে রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে মারাত্মক ত্রুটি ঘটছে। অপচিকিৎসায় মানুষের জীবন নিয়ে টানাটানিও ঘটছে। ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সঙ্গে চিকিৎসকদের একাংশের আঁতাতের কারণে বাংলাদেশে চিকিৎসা ব্যয় বাড়ছে। সার্ক দেশগুলোর মধ্যে চিকিৎসা খাতে রোগীর নিজস্ব ব্যয় সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশে। চিকিৎসা ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় প্যাথলজি সেবার নামে যে নৈরাজ্য চলছে তার অবসান ঘটানো জরুরি হয়ে উঠেছে। ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে ওঠা ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর দিকে সরকারকে নজর দিতে হবে। প্যাথলজি সেবার জন্য ফি নির্ধারণ করে দেওয়ার বিষয়টিও জরুরি।

সর্বশেষ খবর