রবিবার, ৭ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

ডেঙ্গুর ভয়াবহ থাবা

নাগরিক সচেতনতা গড়ে তুলুন

রাজধানীতে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব ঘটছে আশঙ্কাজনকহারে। বর্ষা মৌসুম শুরু হতেই দৃশ্যমান হয়ে পড়েছে ডেঙ্গুর আগ্রাসন। স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমারজেন্সি অপারেশন্স সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, শুক্রবার পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ৯৩ জন। ওই সময়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন ৩৩৯ জন। এর মধ্যে সরকারি হাসপাতালে ১৮৭ আর বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ১৫২ জন। জুলাইয়ের শুরু থেকে গত শুক্রবার পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৭৩। এ বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৩৪৩ জন। জানুয়ারিতে ৩৬, ফেব্রুয়ারিতে ১৮, মার্চে ১২, এপ্রিলে ৪৪, মে-তে ১৩৯, জুনে ১ হাজার ৭২১ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে মারা গেছেন তিনজন; যার মধ্যে একজন চিকিৎসকও রয়েছেন। শুধু রাজধানী নয়, দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছোবল হেনেছে ডেঙ্গু। দিনাজপুরের বেশ কিছু এলাকায় ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ছে। চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ডেঙ্গু নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। শরীরে জ্বর অনুভূত হলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। ডেঙ্গু রোগীকে প্যারাসিটামল ছাড়া কোনো ব্যথার ওষুধ খাওয়ানো যাবে না। রাজধানীতে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের জন্য মশা নিধনের ব্যর্থতাকে দায়ী করা হচ্ছে। দুই সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে মশা নিধনের ওষুধ ছিটানো হলেও তা পর্যাপ্ত নয়। ডেঙ্গুর জন্য দায়ী এডিস মশা। বর্ষা মৌসুমে ছাদে বা ফুলের টবে পানি জমে থাকলে তা এডিস মশার প্রজনন ক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এডিস মশা দিনের বেলায় কামড়ায়। ফলে দিনের বেলায় যাদের ঘুমানোর অভ্যাস তাদের জন্য এডিস মশার শিকার হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। চলতি বছর ডেঙ্গুর আগ্রাসন বাড়তে পারে বলে ব্যাপকভাবে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কারণ বর্ষা মৌসুমের শুরুতে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা অন্য বছরগুলোর চেয়ে বেশি। জুনে রাজধানীতে ২০১৬ সালে ২৫৪, ২০১৭ সালে ২৬৭, ২০১৮ সালে ২৯৫ জন আক্রান্তের ঘটনা ঘটলেও এ বছর আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৭২১ জন। গত বছরের চেয়ে এ সংখ্যা প্রায় ৬ গুণ বেশি। শুধু রাজধানী নয়, বাইরেও ডেঙ্গুর থাবা বিস্তৃত হওয়ায় বাড়তি উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। আমরা আশা করব, ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব রোধে মশা নিধনের বাড়তি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গড়ে তোলা হবে নাগরিক সচেতনতা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর