সোমবার, ৮ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

শিশুরাও ধর্ষণের শিকার

অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর হোন

শিশুদের জন্য অনিরাপদ হয়ে উঠছে বাংলাদেশের মাটি। মনে হচ্ছে আইয়ামে জাহেলিয়ার অবস্থাকেও হার মানাতে চলেছে ধর্ষক নামের বিকৃত যৌনাচারের প্রতিভূরা। শয়তানের এই বরপুত্রদের কারণে প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও শিশুরা ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। তাদের জন্য শিক্ষাঙ্গনও নিরাপদ নয়। শিক্ষক নামধারী লম্পটের লালসার শিকার হচ্ছে তারা। মাদ্রাসার হুজুরও আবির্ভূত হচ্ছে ইবলিসের চেহারায়। নেত্রকোনায় এক মাদ্রাসার এক শিক্ষক মেয়ে শিশু শিক্ষার্থীদের যৌনাচারের শিকার হতে বাধ্য করতেন। ধর্ষণের পর শিশু শিক্ষার্থীকে কোরআন নিয়ে শপথ করাতেন যাতে এ ঘটনা সে বাইরে প্রকাশ না করে। বাবা মা ও নিকটতম গুরুজনদের পর স্কুল মাদ্রাসা মক্তবের শিক্ষকদের গুরুজন বলে ভাবে শিশুরা। কিন্তু সাম্প্রতিককালে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে ওঠা স্কুল মাদ্রাসা এতিমখানা গড়ে তোলার পিছনে শিক্ষক নামধারী কোনো কোনো লম্পটের অসৎ উদ্দেশ্য কাজ করছে বলে মনে করা হয়। কয়েকদিন  আগে নারায়ণগঞ্জের এক মাদ্রাসা শিক্ষককে বিপুলসংখ্যক ছাত্রীর সম্ভ্রম নষ্ট করার দায়ে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। লম্পট মাদ্রাসা শিক্ষক তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ স্বীকারও করেছেন। শুধু শিক্ষাঙ্গন নয় শিশুরা ধর্ষিত হচ্ছে তাদের নিজেদের বাড়িতে। বাবা চাচা নানার বয়সী লম্পটদের হাতে। বেসরকারি সংস্থা শিশু অধিকার ফোরামের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, প্রতি মাসেই বেড়ে চলছে শিশু ধর্ষণের ঘটনা। সংস্থাটি বলছে, গত ৬ মাসে ৪৯৬ শিশুকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। তাদের তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারিতে শিশু ধর্ষণের ঘটনা ঘটে ৫২টি, ফেব্রুয়ারিতে ৬০টি, মার্চে ৫২টি, এপ্রিলে ১২২টি, মে-তে ১১৯টি এবং সর্বশেষ জুন মাসে ৯১টি। এর মধ্যে ধর্ষণের পর খুন হয়েছে ২৩টি। মোট শিশু খুনের ঘটনা ঘটেছে ২০৫টি। শিশু ধর্ষণের যেসব ঘটনা ঘটে তার সিংহভাগই গোপন রাখা হয় পারিবারিক মানসম্মানের ভয়ে। সামান্য যে কয়টি ঘটনা মামলা বা আইনগত পদক্ষেপের সূত্র ধরে প্রকাশ্যে আসছে তার পরিমাণও এত বেশি যা বিশ্বাস করতেও কষ্ট হয়। মানবিক মূল্যবোধ উপেক্ষিত হওয়ায় শিশু ধর্ষণসহ জঘন্য সামাজিক অপরাধের ঘটনা বাড়ছে। ধর্ষণসহ যৌন নির্যাতনের বিরুদ্ধে দেশে কড়া আইন থাকা সত্ত্বেও তার বাস্তবায়নের অভাব এবং বিলম্বিত বিচার অপরাধীদের উৎসাহিত করছে। অপরাধ দমনে আইনের যথাযথ প্রয়োগের ব্যাপারে যত্নবান হতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর