মঙ্গলবার, ৯ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

শ্রমবাজারে অচলাবস্থা

সংকট নিরসনের উদ্যোগ নিন

শ্রমবাজার নিয়ে অস্বস্তিতে ভুগছে বাংলাদেশ। জনশক্তি রপ্তানিতে ভাটার টান চলছে কয়েক বছর ধরে। স্বল্প আয়তনের বাংলাদেশের জনসংখ্যা এখন ১৭ কোটির কাছাকাছি। এ বিপুল জনসংখ্যার কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি সত্যিকার অর্থেই দুরূহ। এ ক্ষেত্রে আশার আলো হয়ে জ্বলছিল মধ্যপ্রাচ্য ও মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারগুলো। কিন্তু বিশ্ব অর্থনীতির মন্দা এবং সেসব দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যার জন্য শ্রমবাজারগুলো সংকুচিত হয়ে পড়ছে। দৃশ্যত রেমিট্যান্স আয় না কমলেও জনশক্তি রপ্তানি কমে যাওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হচ্ছে। যুদ্ধবিগ্রহের কারণে সৌদি আরবে এমনিতেই শ্রমিক নেওয়ার পরিমাণ কমেছে। সেখানে এখন বাংলাদেশি নারী কর্মীদের বিষয়ে আগ্রহ দেখানো হচ্ছে। বাংলাদেশের অন্য শ্রমবাজার আরব আমিরাত দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ। এ ছাড়া সেখানে অচলাবস্থা কাটিয়ে ওঠার তেমন কোনো উদ্যোগও দৃশ্যমান নয়। আরেক বড় বাজার মালয়েশিয়া সরকার পরিবর্তনের পর বন্ধ করে রেখেছে শ্রমিক নেওয়া। তবে সে দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর চলতি বাংলাদেশ সফরের ফলে জট খোলার আশা করা হচ্ছে। বড় শ্রমবাজারগুলো বন্ধ থাকার পাশাপাশি নতুন শ্রমবাজার অনুসন্ধানের বিষয়েও তেমন কোনো উদ্যোগ কার্যকর হয়নি। শ্রমবাজারের এসব সংকটের পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশি শ্রমিকদের নির্যাতিত-নিপীড়িত হওয়ার সংখ্যা বাড়ছে। বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের কর্মীরা প্রায়ই অবৈধ হয়ে পড়ছেন। ট্যুরিস্ট বা ভিজিট ভিসা, স্টুডেন্ট ভিসায় বাংলাদেশিদের বিদেশে গিয়ে অবস্থানের ঘটনাও বাড়ছে। ফলে অবৈধভাবে বিদেশে অবস্থানের কারণে বাংলাদেশিদের আইনগত ঝামেলায় পড়তে হচ্ছে। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, অনেক দেশ বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করছে। বাংলাদেশের মানুষের কর্মসংস্থানের স্বার্থেই শ্রমবাজারগুলো টিকিয়ে রাখা এবং নতুন নতুন শ্রমবাজার খুঁজে বের করা অপরিহার্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশের অর্থনীতি সচল রাখার জন্য রেমিট্যান্স আয়ের প্রবাহ অটুট রাখা দরকার। এ উদ্দেশ্যে সরকারকে সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে। বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনগুলোকে শ্রমবাজার সচল রাখা ও নতুন বাজারের অন্বেষণে সক্রিয় করতে হবে। এটি সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য বলে বিবেচিত হওয়া উচিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর