বুধবার, ১০ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

রাষ্ট্রনায়কোচিত বক্তব্য

রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে পানি ঘোলা কাম্য নয়

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীন সফর সম্পর্কে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে চীনের সহযোগিতার আশ্বাস পাওয়াকে সুখবর বলে অভিহিত করেছেন। বলেছেন, এ কথা ঠিক, চীন মিয়ানমারের সঙ্গে সব সময় আছে। বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গারা যে বাংলাদেশের জন্য বিরাট সমস্যা এ কথাটা তারা নিজেরাও উপলব্ধি করছে। তারাও এ সমস্যার দ্রুত সমাধান চাইছে। এজন্য যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু করার আশ্বাস দিয়েছে চীন। সংবাদ সম্মেলনে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যকে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্ত করার ব্যাপারে মার্কিন কংগ্রেসম্যানের প্রস্তাব প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমরা ১ লাখ ৪৭ হাজার ৫৭০ বর্গকিলোমিটার নিয়েই খুশি। মিয়ানমার তার সার্বভৌমত্ব নিয়ে থাকবে। আমরা আমাদেরটা নিয়ে থাকব। অন্যের কোনো প্রদেশ আমাদের সঙ্গে যুক্ত হওয়া- এটা আমরা চাই না। যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে তিনি বলেন, হতে পারে তারা খুব বড় দেশ। কিন্তু তারা কি তাদের অতীত ভুলে গেছে? তাদের যখন গৃহযুদ্ধ লেগেই থাকত, সেই অতীত তো তাদের ভুলে যাওয়া উচিত নয়। সেটা যে ভবিষ্যতেও আসবে না তা তারা কীভাবে ভাবে? রাখাইন স্টেটে প্রতিনিয়ত যে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে, তা আমরা জেনে-বুঝে ওই ধরনের একটা গোলমেলে জিনিস আমার দেশের সঙ্গে যুক্ত করব কেন? তারা যেখানেই হাত দিয়েছে সেখানেই তো আগুন জ্বলছে। কোথাও তো শান্তি আসেনি। বরং জঙ্গিবাদ সৃষ্টি হয়েছে। অশান্তি সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের অঞ্চলটায় আমরা একটু শান্তিপূর্ণভাবে থাকার চেষ্টা করছি। এখানেও তাদের আগুন লাগানোর প্রচেষ্টা; যা কখনই গ্রহণযোগ্য নয়। সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য খুবই তাৎপর্যের দাবিদার এবং এতে রাষ্ট্রনায়কোচিত মনোভাবেরও প্রকাশ ঘটেছে। রোহিঙ্গা সমস্যা সম্পর্কে বাংলাদেশের অবস্থানও স্পষ্ট করেছে সরকারপ্রধানের দ্ব্যর্থহীন বক্তব্য। বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে মানবিক কারণে। প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার তার নাগরিকদের ফেরত নেবে বাংলাদেশ এমনটিই চায়। মিয়ানমারের কোনো রাজ্যের অধিকার পাওয়া কিংবা সে দেশের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন বাংলাদেশের কাম্য নয়। বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের দ্রুত স্বদেশ প্রত্যাবর্তন চায় এ ইস্যু নিয়ে পানি ঘোলা নয়। আমাদের বিশ্বাস প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে যারা পানি ঘোলা করতে চাচ্ছে তাদের মুখে চপেটাঘাত হানবে। এশিয়ার এই অংশে বাইরের কোনো অপশক্তি যাতে নাক গলাতে না পারে তা নিশ্চিত করতে রোহিঙ্গা সমস্যার সম্মানজনক সমাধানে সংশ্লিষ্ট সবার জন্য তাগিদ সৃষ্টি করবে।

সর্বশেষ খবর