বুধবার, ১০ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা

সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নিন

বাণিজ্যিক রাজধানী নামে অভিহিত চট্টগ্রাম মহানগরের এক বিশাল এলাকা এখন পানির নিচে। বন্দরনগরের অর্ধ কোটি বাসিন্দা জিম্মি হয়ে পড়েছে জলাবদ্ধতার কাছে। নিম্নচাপ হলে জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয় চট্টগ্রাম মহানগরের নিম্নাঞ্চল। ভারী বর্ষণ হলে মহানগরের বড় অংশই ঢাকা পড়ে পানির নিচে। নগরবাসীকে জলাবদ্ধতার অভিশাপ থেকে রক্ষা করতে তিনটি সংস্থাকে ৮ হাজার কোটি টাকার বরাদ্দ দিলেও দৃশ্যমান সুফল অর্জিত হয়নি। সংস্থাগুলোর কাজে সমন্বয় না থাকা, প্রকল্পকাজ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে মনিটর না করা, প্রভাবশালীদের চাপে দখলদারদের উচ্ছেদ করতে না পারা এবং খোদ সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো খাল-নালা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করায় ভেস্তে যাচ্ছে সরকারি সব উদ্যোগ। বাস্তবায়নের অভাবে জলাবদ্ধতা নিরসনে বরাদ্দকৃত টাকাও ফেরত যাচ্ছে। চট্টগ্রামকে জলাবদ্ধতামুক্ত করতে সবচেয়ে বড় প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে। মোট ৫ হাজার ৬১৬ কোটি ৪৯ লাখ ৯০ হাজার টাকা প্রকল্প ব্যয় ধরে সর্বশেষ অর্থবছরে তাদের বরাদ্দ দেওয়া হয় ৮৫০ কোটি টাকা। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে না পারায় এ বরাদ্দ থেকে ফেরত গেছে ৪২৫ কোটি টাকা। এর আগের অর্থবছরেও ৫০০ কোটি টাকার মধ্যে তারা খরচ করতে পেরেছিল মাত্র ১৫০ কোটি। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-চউকের মাধ্যমে ৩৬টি খালের মাটি অপসারণ, ৬ হাজার ৫১৬ কাঠা ভূমি অধিগ্রহণ, নতুন ৮৫ দশমিক ৬৮ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণসহ অন্যান্য প্রকল্পের বাস্তবায়নও যথাযথভাবে সম্পন্ন হয়নি। ২০২০ সালের জুনের মধ্যে চউকের প্রকল্পগুলো সম্পন্ন হওয়ার কথা থাকলেও গত এক বছরে কাক্সিক্ষত অগ্রগতি নেই। চট্টগ্রামকে জলাবদ্ধতামুক্ত করতে পানি উন্নয়ন বোর্ড ১ হাজার ৬২০ কোটি ৭৩ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্প হাতে নিলেও তার সুফল অন্তত চলতি বর্ষণ মৌসুমে মিলবে না। ফলে নিম্নচাপ হলেই চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা অনিবার্য হয়ে দাঁড়ায়। যানজট ও জলাবদ্ধতায় নাকাল হয় বন্দরনগরের অর্ধ কোটি মানুষ। দেশের অর্থনীতির প্রাণভোমরা হিসেবে পরিচিত চট্টগ্রাম মহানগরের জলাবদ্ধতা দেশের অর্থনীতির জন্যও বিসংবাদ সৃষ্টি করছে। ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য তৈরি করছে নিত্যনতুন সমস্যা; যা নিরসনে সমন্বিত পদত্যাগের বিকল্প নেই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর