জলাশয় ভরাটের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর দৃষ্টিভঙ্গি সবারই জানা। তার পরও প্রশাসনের নাকের ডগায় ঘটছে এ অপরাধ। নদ-নদীকে জীবন্ত সত্তা হিসেবে আদালত রায় দিলেও বন্ধ হয়নি দখলদারদের দাপট। রাজউকের অনুমোদন ছাড়াই ‘ড্যাপ’ লঙ্ঘন করে জলাশয় ভরাটের মহোৎসব চলছে তুরাগ তীরের বিরুলিয়ায়। প্রিয়াংকা কালচারাল একাডেমির সাইনবোর্ডের আড়ালে সেখানে শত শত একর জলাভূমি নিশ্চিহ্ন করা হলেও বাধা দেওয়ার কেউ নেই। নদী ও জলাধার রক্ষার দায়িত্ব যাদের তারা কুম্ভকর্ণের নিদ্রায় ব্যস্ত। এ সুযোগে ধরাকে সরা জ্ঞান করে রাতের আঁধারে ইট-সিমেন্টের প্রাচীর তুলে হাজার হাজার ট্রাক বালু ফেলে ভরাট করা হচ্ছে জলাভূমি। মুহূর্তে নিশ্চিহ্ন করা হচ্ছে উন্মুক্ত জলাধার। এতে হুমকিতে পড়েছে তুরাগ নদ ও আশপাশ এলাকার জলাভূমি। স্থানীয় বাসিন্দাসহ ভূমির মালিকরা বাধা দিয়েও দখলবাজ বাহিনীর সামনে টিকতে পারছেন না। তারা সাভার থানায় একের পর এক জিডি ও অভিযোগ দাখিল করে এবং প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে ধরনা দিয়েও বালু ভরাটের অভিশাপ থেকে রেহাই পাচ্ছেন না। উল্টো ভুঁইফোড় হাউজিং প্রতিষ্ঠান প্রিয়াংকার পক্ষ থেকে জমির মালিকসহ এলাকাবাসীর বিরুদ্ধে ২০টিরও বেশি মিথ্যা মামলা দিয়ে প্রশাসনিক হয়রানি চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, এলাকাবাসীর ওপর জোর-জুলুমের কোনো অভিযোগ থানা-পুলিশ আমলে নিচ্ছে না। অন্যদিকে রাজউকও নির্বিকার। সরকারের পক্ষ থেকে বার বার বলা হচ্ছে, ড্যাপ লঙ্ঘন করে জলাভূমি ভরাট করে কোনো স্থাপনা বা আবাসন গড়ে তোলার অনুমোদন দেওয়া হবে না। কেউ এমন করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু দখলদাররা তুরাগ নদকে অবরুদ্ধ করতে কোনো কিছুরই তোয়াক্কা করছে না। রাজউকের অনুমোদন ছাড়াই চলছে জলাভূমি গ্রাসের অশুভ কর্মকান্ড। এলাকাবাসীর আর্তনাদও তাদের আগ্রাসী থাবা থামাতে পারছে না। আমাদের মতে দখলদার চক্রের কর্মকন্ড প্রমাণ করেছে আইনগত ব্যবস্থার হুমকিতেই তারা থেমে থাকবে না।এ ব্যাপারে প্রশাসনকে জলাভূমি রক্ষায় এখনই উদ্যোগ নিতে হবে। জলাশয় গ্রাসের কুশীলবদের আইনের আওতায় আনতে হবে। এ ব্যাপারে কোনো সময় ক্ষেপণ কাম্য নয়।