বৃহস্পতিবার, ১১ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

মশার আগ্রাসন

নাগরিক সচেতনতা গড়ে তুলুন

রাজধানীতে এ বছর ডেঙ্গুর আগ্রাসন অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। ডেঙ্গুর জন্য দায়ী এডিস-জাতীয় মশা। মশা নিধন কার্যক্রমে ফাঁকফোকর থাকায় ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। মশা নিধনের ওষুধ মাঝেমধ্যে ছিটানো হলেও এই ক্ষুদ্র কীটের দৌরাত্ম্য থামানো যাচ্ছে না বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ত্রুটির কারণে। রাজধানীর বিশেষত শহরতলির ডোবা-নালাগুলো মশক উৎপাদনের উর্বর ক্ষেত্র। এগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার কোনো উদ্যোগ না থাকায় মশার উৎপাদন বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না। ঢাকা তো বটেই নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর থেকেও মশা থাবা বিস্তার করছে ঢাকায়। ঢাকার প্রথম নির্বাচিত মেয়র মোহাম্মদ হানিফের চমক লাগানো জয়ের পেছনে মশা সমস্যা সমাধানে পূর্ববর্তী মনোনীত মেয়রের ব্যর্থতা অন্যতম কারণ হিসেবে কাজ করেছে। নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি মশার উৎপাত থেকে রাজধানীবাসীকে রেহাই দিতে নানামুখী উদ্যোগ নেন। তার একটি ছিল বেশ চমকপ্রদ। মশার মূককীট নিধনে রাজধানীর বিভিন্ন ডোবা ও ড্রেনে বিদেশ থেকে আমদানি করা গাপ্পি মাছ ছেড়ে দিয়ে তিনি চমক সৃষ্টি করেন। আন্তরিকতা সত্ত্বেও মশার উৎপাত রোধে তিনি যে শতভাগ সফল হননি তা পরে অকপটে স্বীকারও করেন। নগরবাসীর নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে রাজধানীকে দুই সিটি করপোরেশনে বিভক্ত করার পরও মশার উৎপাত বন্ধে দুই তরফের সাফল্যই প্রশ্নবিদ্ধ। মশা নিধনে দুই সিটি করপোরেশন তাদের বাজেট বাড়ালেও ফল হতাশাজনক। অভিযোগ রয়েছে, মশা নিধনের বরাদ্দকৃত অর্থের এক বড় অংশই চলে যায় লুটেরাদের পকেটে। মশা নিধনে যে ‘ওষুধ’ ছিটানো হয় তার মান নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন। ফলে প্রতি বছর মশা নিধনের বাজেট বাড়লেও নগরবাসীর স্বস্তিদানে তা দৃষ্টিগ্রাহ্য কোনো ভূমিকা রাখতে পারছে না। মশা নিধনে নীতিনির্ধারক পর্যায়ের যারা তাদের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন না থাকলেও প্রশ্ন রয়েছে বাস্তবায়ন পর্যায়ে। নগরবাসীর স্বস্তিদানে কাক্সিক্ষত ফল পেতে হলে মশা নিধন কার্যক্রমের সর্বস্তরে শতভাগ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। যে কায়েমি স্বার্থবাদ উত্তরাধিকারসূত্রে দুই সিটির ঘাড়ে চেপে বসেছে তা নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগী হতে হবে। মশার কবল থেকে রেহাই পেতে বাড়াতে হবে নাগরিক সচেতনতাও। সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমেই মশার আগ্রাসনের ইতি ঘটাতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর