শনিবার, ১৩ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

গণতন্ত্র ও স্বাধীন গণমাধ্যম

কর্তৃত্ববাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান

বিশ্বজুড়ে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখতে হলে স্বাধীন মত প্রকাশ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষা করতে হবে। সত্যকে আড়ালে রেখে মিথ্যার ওপর ভর করে গণতন্ত্র টিকতে পারে না। লন্ডনে অনুষ্ঠিত গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষার জন্য আয়োজিত আন্তর্জাতিক সম্মেলন শেষে বিশ্বের সরকারগুলোর প্রতি এমন আহ্বানই জানানো হয়েছে। লন্ডনে গণমাধ্যম-সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়েছে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা যখন বিশ্বজুড়ে প্রশ্নবিদ্ধ এমন এক সময়ে। দুনিয়ার দেশে দেশে কর্তৃত্ববাদী সরকারের উত্থান স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য বড় বাধা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। কেবল অর্থনৈতিক চাপ তৈরি নয়, সাংবাদিকদের হত্যা, জেল ও নানা হুমকি-ধমকি দিয়ে সত্য গোপন করার চেষ্টা এখন এক বৈশ্বিক প্রবণতা। সত্য প্রকাশে অবিচল থেকেই গণমাধ্যমগুলোকে এ পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে। বিশ্বব্যাপী গণমাধ্যমগুলো যে কঠিন সময় পার করছে, তা থেকে উত্তরণের উপায় খুঁজতে দুই দিনব্যাপী এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এর যৌথ আয়োজক যুক্তরাজ্য ও কানাডা। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষার দাবিতে এটি প্রথম কোনো বৈশ্বিক সম্মেলন। সম্মেলনে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্ট বিশ্বব্যাপী গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষায় পরবর্তী করণীয় হিসেবে পাঁচটি উদ্যোগের ঘোষণা দেন। এর মধ্যে জাতিসংঘের নেতৃত্বে বৈশ্বিক ঐকমত্য গঠন এবং সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণ ও আইনি সহায়তা প্রদান। এ ছাড়া তিনি যুক্তরাজ্যের তরফ থেকে ৩০ লাখ পাউন্ড বরাদ্দের ঘোষণা দেন। পরে সংবাদ সম্মেলনে মানবাধিকারবিষয়ক আইনজীবী আমাল ক্লোনি বলেন, বিশ্বের ১৩ শতাংশ মানুষ গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ভোগ করছে। কেবল পেশাগত দায়িত্ব পালনের কারণে সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতন ও হত্যার ঘটনা ঘটছে। গণতন্ত্র আর সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা একটি অন্যটির পরিপূরক। গণতন্ত্রহীন সমাজে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা কল্পনা করাও কঠিন। বিশ্বের সবচেয়ে বড় এবং প্রভাবশালী একাধিক দেশে কর্তৃত্ববাদী সরকারের উত্থান গণতন্ত্রের জন্য যেমন বিড়ম্বনা সৃষ্টি করেছে, তেমন গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকেও করেছে প্রশ্নবিদ্ধ। এ সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে দুনিয়ার সব দেশ ও জাতিকে যত্নবান হতে হবে।

সর্বশেষ খবর