সোমবার, ১৫ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

তরল দুধে ক্ষতিকর উপাদান

হুমকি দাতাদের নিরস্ত করুন

বাজারের ১০টি দুধের নমুনার সব কটিতে দ্বিতীয় দফার পরীক্ষায়ও অ্যান্টিবায়োটিকের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেডিকেল রিসার্চ সেন্টারের সদ্য সাবেক পরিচালক ও ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক আ ব ম ফারুক ও তার সহ গবেষকরা জানিয়েছেন প্রথম দফায় তারা দুধে তিনটি অ্যান্টিবোয়েটিকের উপস্থিতি পেয়েছেন দ্বিতীয় দফায় মিলেছে চারটি। সাতটি পাস্তুরিত প্যাকেটজাত দুধের নমুনা এবং খোলা দুধের তিনটি নমুনা একই জায়গা থেকে সংগ্রহ করে গবেষক দলের সদস্যরা দ্বিতীয় দফায় পরীক্ষা করে ১০টি নমুনার সব কটিতে অ্যান্টিবায়োটিক পেয়েছেন। কোনো নমুনায় চার ধরনের, কোনোটিতে তিন, আবার কোনোটিতে দুই ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক মিলেছে। অ্যান্টিবায়োটিকগুলো হচ্ছে- অক্সিটেট্রাসাইক্লিন, এনরোফ্লক্সাসিন, সিপ্রোফ্লক্সাসিন ও লেবোফ্লক্সাসিন। দুধ পরীক্ষার ফল প্রকাশ করায় নানা ধরনের কটূক্তি ও হুমকির সম্মুখীন হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন গবেষক দলের সদস্যরা। তারা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেছেন হুমকি দাতারা ‘পারলে পাল্টা গবেষণা করে প্রমাণ করে দিক দুধে কোনো অ্যান্টিবায়োটিক নেই। আ ব ম ফারুক বলেছেন, বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়। অ্যান্টিবায়োটিক মেশানো খাদ্য গ্রহণ করলে ওই অ্যান্টিবায়োটিকগুলো আর মানবশরীরে কাজ করবে না। ওষুধে কাজ না করলে চিকিৎসক বিভ্রান্ত হবেন। অন্য রোগ ভেবে ওষুধ বদলাবেন অথবা আরও শক্তিশালী অ্যান্টিবায়োটিক দেবেন। এটা ভয়াবহ ব্যাপার। তখন সাধারণ সংক্রমণ থেকেও মানুষের মৃত্যু হতে পারে। এ ছাড়া নতুন অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কারে গবেষণা হচ্ছে না। ফলে বাজারের অ্যান্টিবায়োটিকগুলো প্রতিরোধী হয়ে গেলে চিকিৎসা ব্যবস্থায় বিপর্যয় দেখা দেবে। স্মর্তব্য, গত ২৫ জুন এক সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক আ ব ম ফারুকের নেতৃত্বাধীন গবেষক দল বিভিন্ন ব্র্র্যান্ডের সাতটি প্যাকেটজাত তরল দুধের নমুনায় মানব চিকিৎসায় ব্যবহৃত শক্তিশালী অ্যান্টিবায়োটিক উপস্থিতির কথা জানান। এ গবেষণাকে চ্যালেঞ্জ করে একজন অতিরিক্ত সচিব গবেষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দেন। এমনকি গবেষণার সঙ্গে বিভাগের সম্পর্ক নেই এমন দাবি করেন ঢাবির ফার্সেসি বিভাগের চেয়ারম্যান। এ প্রেক্ষাপটে দ্বিতীয় দফার পরীক্ষা চালানো হয় এবং তাতেও ক্ষতিকর অ্যান্টিবোয়োটিকের উপস্থিতি প্রমাণ করেছে গবেষক দলটির পরীক্ষায় কোনো ত্রুটি ছিল না। আমরা আশা করব জনস্বার্থে তরল দুধের ক্ষতিকর অ্যান্টিবোয়োটিকের উপস্থিতির বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া হবে। গবেষক দলকে যারা হুমকি দিচ্ছে তাদের নিরস্ত করাও সরকারের দায়িত্ব বলে বিবেচিত হওয়া উচিত।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর