প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাঁচ দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক সম্মেলনের উদ্বোধনকালে জেলা প্রশাসকদের শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে সরকারি সব সংস্থাকে নিয়ে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে সমন্বিতভাবে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী একই সঙ্গে বলেছেন, ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য উন্নয়নের গতি অব্যাহত রাখাটা জরুরি। আর এটা মাথায় রেখেই জেলা প্রশাসকদের কাজ করে যেতে হবে। রবিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে জেলা প্রশাসক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ৩১ দফা নির্দেশনাও দেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, মাদক একটি পরিবারকে ধ্বংস করে দেয়, সমাজকে ধ্বংস করে দেয়। মাদকের ছোবল থেকে যুবসমাজকে রক্ষা করতে অভিযান পরিচালনা অব্যাহত রাখতে হবে। সন্ত্রাস, মাদক, দুর্নীতিসহ সব ধরনের অসামাজিক কার্যক্রম দূর করতে হবে। দুর্নীতির ক্ষেত্রে স্পষ্ট কথা হচ্ছে- ঘুষ যে নেবে সে শুধু অপরাধী নয়, যে ঘুষ দেবে সেও সমানভাবে অপরাধী। বরং যে ঘুষ দেবে সেই বেশি অপরাধী। এ কথাটি মাথায় রেখে কাজ করলে আমরা এর হাত থেকে দেশকে মুক্ত করতে পারব। প্রধানমন্ত্রী জেলা প্রশাসকদের উদ্দেশে বলেন, সরকারি সেবা গ্রহণে সাধারণ মানুষ যাতে কোনোভাবেই হয়রানি বা বঞ্চনার শিকার না হয় সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে। একই সঙ্গে গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন, সম্ভাবনাময় স্থানীয় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের বিকাশ এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনে ডিসিদের উদ্যোগ নিতে হবে। জেলা প্রশাসক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। জেলা প্রশাসকরা সরকারের চোখ ও কানের ভূমিকা পালন করেন। তাদের কাজের ওপর সরকারের সাফল্য অনেকাংশে নির্ভর করে। বিশেষত আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও মাদকের বিরুদ্ধে প্রশাসনিকভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে জেলা প্রশাসকরা ভূমিকা রাখতে পারেন। সরকারের সব উন্নয়নকাজ যাতে স্বচ্ছভাবে সম্পন্ন হয় তা দেখভাল করে জেলা প্রশাসকরা জনকল্যাণে অবদান রাখতে পারেন। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও মাদক এ মুহূর্তে দেশ, জাতি ও সমাজের জন্য এক বড় চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় জেলা প্রশাসন সরকারের চোখ ও কান হিসেবে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করলে তিন আপদ প্রতিরোধে দৃষ্টিগ্রাহ্য সাফল্য অর্জন করা যাবে- এমনটিই আশা করা যায়।