শুক্রবার, ১৯ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

হজের ফরজ ওয়াজিব

শাহ মাহমুদ হাসান

হজের ফরজ ওয়াজিব

হজের মূল কার্যক্রম শুরু হয় সেলাইযুক্ত কাপড়, টুপি ইত্যাদি খুলে সাদা দুই টুকরো কাপড় পরিধান করে দুই রাকাত নামাজ আদায়ের পর হজ বা ওমরাহর নিয়ত করে তালবিয়া ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইকা, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল-হামদা ওয়ান-নিমাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা শারিকা লাক’ পাঠের মাধ্যমে। হজের ইহরাম বাঁধার জন্য রয়েছে নির্দিষ্ট স্থান। যেগুলোকে বলা হয় মিকাত। এই মিকাত অতিক্রমের আগেই ইহরামের কাপড় পরিধান করতে হয়। বাংলাদেশি হাজীদের মিকাত হলো কারনুল মানজিল। মক্কার হারাম এলাকার ভিতরে অবস্থানরত অবস্থায় ইহরাম বাঁধার জন্য হারাম এলাকার বাইরে আয়েশা মসজিদ বা অনুরূপ কোথাও যেতে হয়। হজের ফরজ : ১. ইহরাম বাঁধা ২. আরাফার ময়দানে অবস্থান করা ও ৩. তাওয়াফে জিয়ারত করা। হজের ওয়াজিব : ১. সাফা ও মারওয়ার মাঝে সায়ি করা ২. মুজদালিফায় নির্দিষ্ট সময় অবস্থান করা ৩. নির্দিষ্ট দিনে জামারায় কঙ্কর নিক্ষেপ ৪. কোরবানি করা ৫. মাথা মু-ন করা বা চুল ছোট করা ও ৬. তাওয়াফে বিদা বা বিদায়ী তাওয়াফ করা। দেখুন তুহফাতুল ফুকাহা। ওমরাহর ফরজ : ১. ইহরাম বাঁধা ২. বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করা ৩. সাফা ও মারওয়ার মাঝে সায়ি করা। ওমরাহর ওয়াজিব : মাথা মুন্ডন বা চুল ছোট করা।

হজের প্রথম দিন : মিনায় রওনা হওয়ার উত্তম সময় হলো ৮ জিলহজ সূর্যোদয়ের পর। রওনা হওয়ার আগে দুই রাকাত নামাজ পড়ে নেওয়া সুন্নত। ৮ জিলহজ জোহর থেকে ৯ জিলহজ ফজর পর্যন্ত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মিনায় পড়া সুন্নত। আর ৮ জিলহজ দিবাগত রাত মিনায় অবস্থান করা সুন্নত।

হজের দ্বিতীয় দিন : ৯ জিলহজের দিনে আরাফায় অবস্থান করা ফরজ। সুতরাং ৯ তারিখ সূর্যোদয়ের পরপরই মিনা থেকে আরাফার উদ্দেশে রওনা দেওয়া উত্তম। দেখুন মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা। আরাফায় উকুফের সময় ৯ জিলহজ সূর্যাস্তের আগ পর্যন্ত। সূর্যাস্তের আগে আরাফা ত্যাগ করা জায়েজ নয়। আরাফার মাঠে মসজিদে নামিরার জামাতে অংশগ্রহণ করতে পারলে জোহর ও আসর একত্রে ইমামের পেছনে আদায় করে নিতে হয়। কিন্তু মসজিদে নামিরার জামাতে অংশগ্রহণ করা সম্ভব না হলে জোহরের সময় জোহর ও আসরের সময় আসর পড়া উত্তম। দেখুন মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা। ৯ জিলহজ ফজর থেকে ১৩ জিলহজ আসর পর্যন্ত প্রতি ফরজ নামাজের পর তাকবিরে তাশরিক পড়া মুসলমান ও হাজীদের ওপর ওয়াজিব। ৯ জিলহজ দিবাগত রাতে মুজদালিফায় অবস্থান করা সুন্নত। তাই আরাফার ময়দান থেকে সূর্যাস্তের পরপর মাগরিবের নামাজ না পড়েই মুজদালিফার উদ্দেশে রওনা হতে হয়। মুজদালিফায় একত্রে মাগরিব ও এশার নামাজ একত্রে পড়া ওয়াজিব।

হজের তৃতীয় দিন : উকুফে মুজদালিফার সময় ১০ জিলহজ সুবহে সাদিক থেকে চারদিক খুব ফরসা হওয়া পর্যন্ত। দেখুন মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা। ১০ তারিখ হাজীদের অনেক বিধান সম্পন্ন করতে হয়। যথা ১. জামারায়ে আকাবার কঙ্কর মারা ২. কোরবানি করা ৩. মাথার চুল কাটা ৪. তাওয়াফে জিয়ারত ও ৫. হজের সায়ি করা। উল্লেখ্য, হাজীদের জন্য ঈদুল আজহার কোনো নামাজ নেই।

হজের চতুর্থ ও পঞ্চম দিন : ১১ ও ১২ জিলহজ মিনার জামারায় নির্দিষ্টসংখ্যক কঙ্কর নিক্ষেপ করা ওয়াজিব।

লেখক : ইমলামবিষয়ক গবেষক।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর