শুক্রবার, ১৯ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

দিকে দিকে বন্যার ছোবল

দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে

দেশের প্রায় সব নদ-নদীর পানি বাড়ছে। দেশজুড়ে মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে মাঝারি থেকে ভারি বর্ষণের পাশাপাশি উজান থেকে আসা ঢলে বেশকিছু নদ-নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। অনেক নদ-নদীর পানি বিপদসীমা ছুঁইছুঁই করছে। পদ্মা, মেঘনা, যমুনা নদী ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বেড়েই চলেছে। উজান থেকে আসা ঢলে মাত্র কয়েক দিন আগের শুষ্ক তিস্তা এখন প্রমত্তা নদী। লালমনিরহাটসহ উত্তরাঞ্চলের নদ-নদীর পানি বাড়ছে অস্বাভাবিক হারে। সিলেট অঞ্চলে সুরমা, কুশিয়ারাসহ কয়েকটি নদ-নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নেত্রকোনার কলমাকান্দায় সোমেশ্বরী নদী, চট্টগ্রামের দোহাজারীতে সাংগু নদ, সিলেটের সারিঘাটে সারিগোয়াইন নদ, সিলেট ও শেরপুরে কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সব মিলিয়ে ভারি বৃষ্টি ও উজান থেকে আসা ঢল অব্যাহত থাকলে মাঝারি এমনকি বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে। অবশ্য দেশে এবং উজানে বৃষ্টি কমলে এ আশঙ্কা অনেকটাই কমে আসবে। বাংলাদেশ প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ দেশ। ঝড়-বন্যা এ দেশের মানুষের নিত্যসঙ্গী। দেশে নদ-নদীগুলোর গভীরতা কমে যাওয়ায় পানি ধারণক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে এবং এর ফলে উজান থেকে পাহাড়ি ঢল নেমে এলেই বিপর্যয় অনিবার্য হয়ে উঠছে। বন্যা প্রতিরোধে নদ-নদীর গভীরতা বৃদ্ধির দিকে উদ্যোগ নিতে হবে। এর ফলে নদ-নদীর নাব্য যেমন বাড়বে তেমন বন্যার আশঙ্কা থেকে অনেকটাই রক্ষা পাওয়া যাবে। নদ-নদী সংস্কারের উদ্যোগ নিলে বন্যার সাংবার্ষিক থাবা থেকে মুক্ত থাকার পাশাপাশি শুষ্ক মৌসুমে পানি ধরে রাখার সুযোগ সৃষ্টি হবে। আমাদের কা-জ্ঞানহীন আচরণের কারণেই দেশের অধিকাংশ নদ-নদী অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে। বন্যা কিংবা খরার সময় নদ-নদী সংস্কারের কথা ভাবা হলেও এ বিষয়ে কাজের কাজ খুব একটা হচ্ছে না। দেশের যেসব জেলায় বন্যা ছোবল হেনেছে, সেসব এলাকার দুর্গত মানুষের ত্রাণে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে উদ্যোগ নিতে হবে। শুধু খাদ্যসহায়তা নয়, বিশুদ্ধ পানির অভাব পূরণেও হাত বাড়াতে হবে। আমরা আশা করব, বন্যাকবলিতরা সাহসের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলার সক্ষমতা দেখাবেন। হার না মানা মনোভাবের মাধ্যমে সব প্রতিকূলতা জয়ে সক্ষম হবেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর