সোমবার, ২২ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

ছেলেধরা আতঙ্ক

গুজবে কান দেওয়া সমীচীন নয়

ছেলেধরা সন্দেহে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গণপিটুনিতে অন্তত চারজন মারা গেছে। আহত হয়েছে আরও অনেকে। সর্বনাশা গুজব থেকে এ বিকারগ্রস্ততার সৃষ্টি। ছেলেধরা আতঙ্কে অনেকে তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠানো বন্ধ রাখছেন। দেশের একটি সেতুতে মানুষ বলি দিতে হবে এমন গুজব পরিকল্পিতভাবে ছড়িয়ে দেয় মতলববাজ একটি মহল। তারপর থেকে ঘটছে একের পর এক অঘটন। কোথাও কাউকে সন্দেহজনকভাবে আনাগোনা করতে দেখলে তার ওপর হামলে পড়ছে এলাকাবাসী। খোদ রাজধানীতেও এমন ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে এক নারী। গণপিটুনির ঘটনায় অনেক ক্ষেত্রে টার্গেট হয়ে পড়ছে মানসিক প্রতিবন্ধীরা। সাধারণ ভাষায় যাদের বলা হয় আধা পাগল বা অর্ধ উন্মাদ। গত শুক্র ও শনিবার ছেলেধরা সন্দেহে রাজধানী ঢাকা ও ঢাকার সাভারে দুই নারী এবং ঢাকার কেরানীগঞ্জে ও নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে অজ্ঞাত পরিচয় দুই যুবককে পিটিয়ে হত্যা করেছে এলাকাবাসী। এ ছাড়া সিদ্ধিরগঞ্জ, পাবনার চাটমোহর ও ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে আরও তিন ব্যক্তি গণপিটুনির শিকার হয়ে মারাত্মক আহত হয়। পুলিশ সদর দফতরের পক্ষ থেকে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘পদ্মা সেতু নির্মাণে মানুষের মাথা লাগবে’ বলে একটি গুজব ছড়ানোকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে মর্মান্তিকভাবে কয়েকজনের প্রাণহানি ঘটেছে। গুজব ছড়িয়ে দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করা রাষ্ট্রবিরোধী কাজের শামিল এবং গণপিটুনি দিয়ে মৃত্যু ঘটানো ফৌজদারি অপরাধ। ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনির শিকার হয়ে এ পর্যন্ত যতগুলো নিহতের ঘটনা ঘটেছে পুলিশ প্রতিটি ঘটনা আমলে নিয়ে তদন্তে নেমেছে। এসব ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। বিবৃতিতে গুজবে বিভ্রান্ত হয়ে ছেলেধরা সন্দেহে কাউকে গণপিটুনি দিয়ে আইন নিজের হাতে তুলে না নেওয়ার জন্য সবার প্রতি অনুরোধ জানিয়ে সবাইকে গুজব ছড়ানো এবং গুজবে কান দেওয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হয়। এতে কাউকে ছেলেধরা সন্দেহ হলে গণপিটুনি না দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। আমাদের বিশ্বাস, ছেলেধরা আতঙ্ক রোধে পুলিশের পক্ষ থেকে দেওয়া বিবৃতিটি ফলপ্রসূ ভূমিকা রাখবে। এ ব্যাপারে প্রতিটি এলাকার বুদ্ধিবৃত্তির সঙ্গে জড়িত লোকজন এবং গণপ্রতিনিধিরা সাধারণ মানুষকে উদ্বুদ্ধ করবেন এমনটিও প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর