সোমবার, ২২ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

বন্যা ও নদী ভাঙন

দুর্গতদের পাশে দাঁড়াতে হবে

বন্যার পাশাপাশি মড়ার উপর খাঁড়ার ঘার মতো অবস্থা সৃষ্টি করেছে নদী ভাঙনের ঘটনা। আশঙ্কা করা হচ্ছে এ বছর বন্যা দীর্ঘায়িত হতে পারে এবং স্বভাবতই ক্ষয়ক্ষতিও হতে পারে অন্য সব বছরের চেয়ে বেশি। দেশের অন্যতম দুটি প্রধান নদী যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জামালপুরে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। টাঙ্গাইলে যমুনার পানি বিপদসীমার ৯৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ভূঞাপুরের টেপিপাড়া এলাকায় ভূঞাপুর-তারাকান্দি বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় নতুন করে প্লাবিত হয়েছে চারটি উপজেলা। এর ফলে প্রায় তিন লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। জেলা প্রশাসনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী জেলার ছয়টি উপজেলা টাঙ্গাইল সদর, ভূঞাপুর, গোপালপুর, কালিহাতী, নাগরপুর, দেলদুয়ারের ৩৪টি ইউনিয়নের প্রায় ২১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এ ছাড়া এক হাজার ৩৩০টি বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। তিন হাজার ৩৬ হেক্টর জমির ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। শরীয়তপুরের পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। নড়িয়ার সুরেশ্বর পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি ৪৪০ সেন্টিমিটার প্রবাহিত হয়েছে। যা বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার নিচে রয়েছে। গত ১০ দিনে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদীর তীরবর্তী কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানি ওঠার কারণে নড়িয়া-জাজিরা সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। রাজশাহীতে প্রতিদিন হু-হু করে বাড়ছে পদ্মা নদীর পানি। গত এক সপ্তাহে এক মিটারের বেশি বেড়েছে পানির উচ্চতা। নেত্রকোনার প্রধান নদীগুলোর পানি কমে গেলেও পাহাড়ি ঢল ও ভারি বর্ষণের ফলে প্লাবিত হওয়া নদীতীরবর্তী এলাকাগুলোতে জনদুর্ভোগ বেড়েছে। বগুড়ার যমুনা নদীর পানি কমতে শুরু করলেও এখনো বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে বাঙ্গালী নদীর পানি। সপ্তাহব্যাপী বন্যায় জেলার তিনটি উপজেলায় ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। চলতি বছর সারা দেশে বন্যা বড় ধরনের ছোবল হানলেও সে তুলনায় ত্রাণ তৎপরতা নেই বললেই চলে। রাজনৈতিক দলগুলোর ত্রাণ তৎপরতাও সীমিত। বন্যা দুর্গতদের পাশে অন্য বছরের মতো এগিয়ে আসেনি সামাজিক সংগঠনগুলো। ফলে সরকারি ত্রাণ তৎপরতার ওপর বন্যা দুর্গতদের নির্ভর করতে হচ্ছে। দুর্গত এলাকায় শুকনা খাবার ও পানীয় জলের অভাব দেখা দিয়েছে। ছড়িয়ে পড়ছে পানিবাহিত রোগ। বন্যায় সবচেয়ে দুর্ভোগে পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষ। নদী ভাঙনের শিকার যারা তাদের দুর্ভোগের শেষ নেই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর