শিরোনাম
সোমবার, ২২ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

ইসলামে প্রতারণা করা হারাম

হাফেজ মাওলানা আবুল হাসান সাঈদ

আল্লাহতায়ালা আমাদের মানুষ হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। আমাদের অভিহিত করেছেন আশরাফুল মাখলুকাত তথা সৃষ্টির সেরা হিসেবে। তবে সৃষ্টির সেরা শুধু মানুষের মতো অবয়ব হলেই হওয়া যায় না। সেরা হওয়ার জন্য প্রয়োজন কিছু সৎ গুণাবলি অর্জন করা এবং কিছু অসৎ গুণাবলি পরিহার করা। মানুষের মধ্যে এমন কিছু খারাপ গুণ রয়েছে যে গুণগুলো ব্যক্তিকে মানুষের কাছে নিন্দনীয় এবং মহান আল্লাহর কাছে অপরাধী করে দেয়। এমন একটি গুণ হলো প্রতারণা বা ধোঁকা। ইসলামে প্রতারণা সম্পূর্ণ হারাম। পবিত্র কোরআনে এ সম্পর্কে বলা হয়েছে। দুর্ভোগ তাদের জন্য যারা মাপে কম দেয়।

যারা লোকদের কাছ থেকে মেপে নেওয়ার সময় সম্পূর্ণ মাত্রায় গ্রহণ করে। আর তাদের যখন মেপে দেয় অথবা ওজন করে দেয় তখন কম দেয়। তারা কি বিশ্বাস করে না যে তারা পুনরুত্থিত হবে মহা দিনে। সেদিন সব মানুষ সৃষ্টিকুলের রবের সামনে দাঁড়াবে। (সূরা মুতাফফিফিন ১-৬)। ওয়াইলুন শব্দের অর্থ ধ্বংস বা পীড়াদায়ক আজাবের ভয়াবহতা। মূলত ধোঁকা বা প্রতারণা করা অত্যন্ত গর্হিত ও পাপের কাজ। যে কারণে আল্লাহতায়ালা প্রতারণাকারীদের সতর্ক করার জন্য শব্দটি ব্যবহার করেছেন। প্রতারণাকারীদের পরিণাম অত্যন্ত ভয়াবহ। প্রতারণাকারীদের তিরস্কার করে আল্লাহতায়ালা বলেন, তারা ধোঁকা দেয় আল্লাহকে এবং ইমানদারদের বস্তুত তারা নিজেরাই নিজেদের ধোঁকা দেয় অথচ তারা বোঝে না। (সূরা বাকারা ৯)। আলমে আখেরাতে আমরা যখন রবের কাছে পুনরুত্থিত হব যেদিন অগণিত পয়গম্বর বলবেন ইয়া নফসি ইয়া নফসি। সেদিন একমাত্র ব্যক্তি সায়্যিদুনা নাবিয়্যুনা মুহাম্মাদুর রসুলুল্লাহ (সা.) বলবেন ইয়া উম্মাতি যার সুপারিশ ছাড়া আমরা জান্নাত লাভ করতে পারব না। তিনি যদি কাউকে উম্মত হিসেবে অস্বীকৃতি জানান তাহলে তার জন্য জান্নাত লাভ করা এবং মহান আল্লাহর ক্ষমাপ্রাপ্ত হওয়া অসম্ভব। সেই নবী (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি ধোঁকা দেয় সে আমার উম্মত নয়। তাহলে চিন্তা করুন প্রতারণা কত বড় পাপের কাজ। প্রিয় পাঠক আপনার চারপাশে একটু নজর করে দেখেন সর্বত্র প্রতারণা ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে মানুষকে ধোঁকা দেওয়ার জন্য নানাবিধ কৌশল রয়েছে। যেমন- রডের বদলে বাঁশ, খাদ্যে ভেজাল, মাপে কম দেওয়া, দুধে পানি মেশানো, মাছের ওজন বাড়ানোর জন্য সিসা ব্যবহার করা, মালিকের অনুপস্থিতিতে শ্রমিকের কাজে ফাঁকি দেওয়া। মেকাপ দিয়ে প্রকৃত চেহারা ঢেকে দেওয়া ইত্যাদি। এসব কিছুই প্রতারণার শামিল। রসুল (সা.) বলেন, তোমরা সদা সত্য কথা বল। নিশ্চয়ই সত্য কথা সৎ কর্মের দিকে পরিচালিত করে। একজন সত্যবাদী মুসলমান ব্যবসায়ী কেয়ামতের দিন শহীদদের সাথী হবে অর্থাৎ শহীদদের সঙ্গে হাশর হবে। (আল মুসতাদরিকুল হাকিম)। হে আল্লাহ আমাদের সব ধরনের অসৎ গুণাবলি পরিহার করে সৎ গুণাবলি সম্পূর্ণ একজন আদর্শ মুসলমান হিসেবে কবুল করে নিন।

লেখক :  ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর