বুধবার, ২৪ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

শেয়ারবাজারে ধস

‘জুয়াড়িদের’ ধরার চেষ্টা করুন

শেয়ারবাজারের নিম্নমুখী প্রবণতা বিনিয়োগকারীদের পেটে লাথি মারার মতো বিপদ সৃষ্টি করেছে। অব্যাহত দরপতনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ প্রদর্শনও করেছেন বিনিয়োগকারীরা। বোদ্ধাজনদের মতে, দরপতনে মাত্র ১৫ দিনে উধাও হয়ে গেছে ২৭ হাজার কোটি টাকা। আর মাত্র এক দিনেই বিনিয়োগকারীদের ৪ হাজার ৩৫৮ কোটি টাকার লোকসান গুনতে হয়েছে। সবারই জানা, দরপতনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছিলেন বিনিয়োগকারীরা। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে টানা দরপতন ঠেকাতে প্রধানমন্ত্রী বরাবর ১৫ দফা দাবি জানিয়ে স্মারকলিপি জমা দেওয়ার পর সে আন্দোলন স্থগিত করেছিলেন তারা। কিন্তু গত সোমবার দরপতনে ফের রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন বিনিয়োগকারীরা। মতিঝিলে ডিএসই ভবনের সামনে তারা মানববন্ধনও করেছেন। সোমবার লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৮ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দর কমেছে। ব্যাংক খাতে শেয়ার দর কমেছে ৫৭ শতাংশের। তালিকাভুক্ত ৩০টি ব্যাংকের মধ্যে ১৭টি দর হারিয়েছে। সোমবার ডিএসইতে ৩৬৪ কোটি ১৮ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। ৩৫৩টি প্রতিষ্ঠান শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৭৭টির বা ৭৮ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর কমেছে। দর বেড়েছে ৬০টির বা ১৭ শতাংশের এবং ১৬টি বা ৫ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত রয়েছে। অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৯৯ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ২১৫ পয়েন্টে। শেয়ারবাজারে অব্যাহত দরপতনের ফলে বিনিয়োগকারীদের নিঃস্ব হওয়ার প্রক্রিয়া অনিবার্য হয়ে উঠেছে। চলছে শেয়ারবাজার নিয়ে মতলববাজদের জুয়া খেলা। তাদের ষড়যন্ত্রে দেশের পুঁজিবাজার সম্পর্কে জনমনে নেতিবাচক ধারণার সৃষ্টি হয়েছে। দরপতনের সংকট উত্তরণে সরকারের পক্ষ থেকে একের পর এক পদক্ষেপ নেওয়া হলেও তা সফল হয়নি পর্দার আড়ালের কুশীলবদের জন্য। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, আমাদের দেশের পুঁজিবাজার যেমন শক্ত ভিতের ওপর গড়ে ওঠেনি, তেমন বিনিয়োগকারীদের অনেকেই বিনিয়োগ করেন না জেনে না বুঝে। ফলে বিনিয়োগকারীরা প্রতারকদের জন্য পোয়াবারো হয়ে দাঁড়ান। এ অবস্থার অবসানে সরকারকে পুঁজিবাজার সম্পর্কে কঠোর হতে হবে। নিজেদের সুনামের স্বার্থেই পুঁজিবাজারের ‘জুয়াড়ি’দের ধরার চেষ্টা চালাতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর