শুক্রবার, ২৬ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

সর্বনাশা সাইবার ক্রাইম

সচেতনতা সৃষ্টির বিকল্প নেই

সাইবার ক্রাইম আগ্রাসী রূপ ধারণ করছে এবং তরুণ-তরুণীরা নির্দয়ভাবে এর শিকার হচ্ছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সাইবার অপরাধী চক্রের টার্গেটে পরিণত হচ্ছে তরুণীরা। বিকৃত মানসিকতার অপরাধীরা নানা ছলনায় ফেসবুকের মেসেঞ্জারে খুদে বার্তা ও ভিডিও কল আদান-প্রদান করে টার্গেট তরুণীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলে। তারপর প্রেমের ফাঁদে ফেলে যৌনাচারে লিপ্ত হয় এবং গোপনে দুজনের অবৈধ সম্পর্কের ভিডিওচিত্র ধারণ করে। পরে গোপন ভিডিও ফেসবুকে ছড়ানোর হুমকি দিয়ে অর্থ আদায়, এমনকি বার বার যৌন সম্পর্ক স্থাপনে বাধ্য করা হয়। সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশন নামক একটি বেসরকারি সংস্থা ২০১৮ সালের মে মাসে ‘বাংলাদেশে সাইবার অপরাধের প্রবণতা’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রকাশ করে। এতে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করতে গিয়ে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়সী মেয়েরা। আর ভুক্তভোগীদের মধ্যে ১৮ বছরের কম মেয়ের সংখ্যা ১০.৫২%, ১৮ থেকে ৩০ বছরের কম নারীর সংখ্যা ৭৩.৭১%, ৩০ থেকে ৪৫ বছর বয়সী নারীর সংখ্যা ১২.৭৭% এবং ৪৫ বছরের বেশি নারীর সংখ্যা ৩%। নারী ব্যবহারকারীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করতে গিয়ে নানাভাবে সাইবার ক্রাইমের শিকার হচ্ছেন। এর মধ্যে অনলাইনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুয়া অ্যাকাউন্টে অপপ্রচারের শিকার হন ১৪.২৯ শতাংশ নারী। এ ছাড়া ছবি বিকৃতির মাধ্যমে অনলাইনে অপপ্রচারে ১২.০৩ শতাংশ নারী আক্রান্ত হন। আর অনলাইনে নারীদের হুমকিমূলক বার্তাপ্রাপ্তির হার ৯.৭৭ শতাংশ। গবেষণায় দেখা যায়, তথ্য চুরির শিকার হন ৫.২৬ শতাংশ নারী। পর্নো ভিডিওর মাধ্যমে অপপ্রচারের শিকার হন ১.৫০ শতাংশ নারী। সাইবার ক্রাইমের শিকার হয়ে অনেক নারী আত্মহত্যায় বাধ্য হন। দেশের বিপুলসংখ্যক নারী সাইবার ক্রাইমের শিকার হওয়া সত্ত্বেও লোকলজ্জার ভয়ে অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নিতে ভয় পান। অধিকাংশ ক্ষেত্রে সাইবার ক্রাইমের শিকার হয় স্বল্পশিক্ষিত মেয়েরা। বিশেষত গার্মেন্টের মেয়েদের মধ্যে সাইবার ক্রাইমের শিকার হয়ে সম্ভ্রমহানির শিকার হওয়ার সংখ্যা বিপুল। সাইবার ক্রাইমের কবল থেকে রক্ষা পেতে হলে ইন্টারনেট ব্যবহারে কীভাবে নিরাপদ থাকা যায় সে কৌশল রপ্ত করতে হবে। সস্তা আবেগ থেকে দূরে থাকতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর