অধিভুক্ত সাত কলেজ নিয়ে ধোঁয়াশা কিছুতেই কাটছে না। রাজধানীর শীর্ষ সাত সরকারি কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিগ্রহণ করা হয়েছিল কোনো সুবিবেচনা ছাড়াই। আড়াই লাখ শিক্ষার্থীর সাত কলেজ অধিগ্রহণের আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকবল বাড়ানোর কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। ফলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকার সময় সেশনজটসহ যেসব সমস্যায় ভুগছিলেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হওয়ার পর আরও অনিশ্চিত হয়ে ওঠে। সেশনজটের ধকল আরও অসহ্য হয়ে ওঠে। ফল প্রকাশেও মাসের পর মাস লেগেছে। এ ছাড়া প্রশ্ন প্রণয়নে সমস্যা, ভুলেভরা প্রশ্ন, সিলেবাসবহির্ভূত প্রশ্ন প্রণয়ন ও গণহারে ফেল করানোর অভিযোগও ওঠে ঢাবি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সাত কলেজ অধিভুক্ত করার পর তারাও সেশনজটে পড়েছেন। নানা সমস্যা পোহাতে হচ্ছে তাদের। শিক্ষকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রয়োজনীয় সময় দিতে পারছেন না। অধিভুক্ত করার সময় থেকেই ঢাবি শিক্ষার্থীরা এর বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। কারণ, বিশ্ববিদ্যালয়ে এমনিতেই হাজারো সমস্যা। এসব সমস্যা সমাধান না করে অন্যদিকে দৃষ্টি দেওয়ার সময় কোথায়? অথচ সাত কলেজের লিখিত পরীক্ষা নেওয়া, ভাইভা নেওয়া, খাতা মূল্যায়নসহ যাবতীয় কাজ করছেন শিক্ষকরা। এ ছাড়া রেজিস্ট্রার বিল্ডিং, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দফতর, বিভিন্ন ব্যাংকে গিয়েও শিক্ষার্থীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। কারণ, শুধু ঢাবি শিক্ষার্থীদের জন্য এসব অবকাঠামো করলেও তা প্রায় ৩ লাখ শিক্ষার্থী ব্যবহার করছেন। সাত কলেজের কারণে ঢাবি শিক্ষার্থীদের নানা সমস্যা পোহানোর প্রতিবাদেই অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীরা গত সপ্তাহে দুই দিন বিশ্ববিদ্যালয় অচল করে রাখেন। তাদের হুমকি- অধিভুক্তি বাতিল না হলে তারা আবারও আন্দোলনে নামবেন। অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সংযুক্ত হওয়ার পর খুশি হয়েছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আভিজাত্যের অংশীদার হওয়ার গর্বে গর্বিত হলেও এখন তাদের ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচির মতো অবস্থা। কারণ, ঢাবির অধিভুক্তি তাদের শুধু বঞ্চনাই দিয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে সাত কলেজকে আবারও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরিয়ে আনাই হবে বাঞ্ছনীয়। তবে তাদের সমস্যা সমাধানেও কর্তৃপক্ষকে যত্নবান হতে হবে।