মঙ্গলবার, ৩০ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা
ইতিহাস

হজরত ওসমান (রা.)

হজরত ওসমান (রা.)-এর জন্ম সন ও তারিখ নিয়ে বেশ মতপার্থক্য রয়েছে। অধিকাংশের মতে তার জন্ম ৫৭৬ খ্রিস্টাব্দে অর্থাৎ হস্তীসনের ছয় বছর পর। এ হিসাবে তিনি হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে ছয় বছরের ছোট। অধিকাংশ বর্ণনামতেই তাঁর জন্ম সৌদি আরবের মক্কা নগরীতে। অবশ্য অনেকের বর্ণনামতে তাঁর জন্ম তায়েফে বলা হয়েছে। ওসমানের কুনিয়া আবু আমর, আবু আবদিল্লাহ, আবু লায়লা। তাঁর উপাধি জুন-নুরাইন। তার পিতা ও মাতা কুরাইশ এবং উমাইয়া শাখার সদস্য। তার ঊর্ধ্বপুরুষ আবদে মান্নাফে গিয়ে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বংশের সঙ্গে মিলিত হয়েছে।

ইসলাম গ্রহণের পর মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর কন্যা রুকাইয়ার সঙ্গে ওসমানের বিয়ে দেন। হিজরি দ্বিতীয় সনে তাবুক যুদ্ধের পরপর মদিনায় রুকাইয়া ইন্তেকাল করেন। এরপর রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর দ্বিতীয় কন্যা উম্মে কুলসুমকে ওসমানের সঙ্গে বিয়ে দেন। এ কারণেই তিনি মুসলিমদের কাছে জুন-নুরাইন বা দুই জ্যোতির অধিকারী হিসেবে খ্যাত। তবে এ নিয়ে কিছু মতভেদ রয়েছে। যেমন ইমাম সুয়ুতি মনে করেন ইসলাম গ্রহণের আগেই ওসমানের সঙ্গে রুকাইয়ার বিয়ে হয়েছিল। তবে অধিকাংশ ইতিহাসবেত্তা এ ধারণা পরিত্যাগ করেছেন। ওসমান ও রুকাইয়া ছিলেন প্রথম হিজরতকারী মুসলিম পরিবার। তারা প্রথম আবিসিনিয়ায় হিজরত করেছিলেন। সেখানে তাদের একটি ছেলে জন্ম নেয় যার নাম রাখা হয় আবদুল্লাহ ইবন ওসমান। হিজরি চতুর্থ সনে আবদুল্লাহ মারা যায়। তাবুক যুদ্ধের পরপর রুকাইয়া মারা যান। এরপর ওসমানের সঙ্গে উম্মে কুলসুমের বিয়ে হয় যদিও তাদের ঘরে কোনো সন্তান আসেনি। হিজরি নবম সনে উম্মে কুলসুমও মারা যান। পরে তিনি আবদুর রহমান ইবনে আউফ (রা.)-এর কন্যা নায়ালাকে বিয়ে করেন।

হজরত ওসমান (রা.) ছিলেন মধ্যমাকৃতির সুঠাম দেহের অধিকারী। মাংসহীন গ-দেশ, ঘন দাড়ি, উজ্জ্বল ফরসা ঘন কেশ, বুক ও কোমর চওড়া, কান পর্যন্ত ঝোলানো জুলফি, পায়ের নলা মোটা, পশমভরা লম্বা বাহু, মুখে বসন্তের দাগ, মেহেদি রঙের দাড়ি ও স্বর্ণখচিত দাঁত।

হজরত ওসমান ছিলেন কুরাইশ বংশের অন্যতম কুষ্ঠিবিদ্যাবিশারদ। কুরাইশদের প্রাচীন ইতিহাসেও ছিল তাঁর গভীর জ্ঞান। তাঁর প্রজ্ঞা, অভিজ্ঞতা, সৌজন্য ও লৌকিকতাবোধ ইত্যাদি গুণের জন্য সব সময় তাঁর পাশে মানুষের ভিড় জমে থাকত। জাহেলি যুগেও কোনো অপকর্ম তাঁকে স্পর্শ করতে পারেনি। লজ্জা ও প্রখর আত্মমর্যাদাবোধ ছিল তাঁর মহান চরিত্রের প্রধান বৈশিষ্ট্য। যৌবনে তিনি অন্যান্য অভিজাত কুরাইশের মতো ব্যবসা শুরু করেন। সীমাহীন সততা ও বিশ্বস্ততার গুণে ব্যবসায়ে অসাধারণ সাফল্য লাভ করেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর