বুধবার, ৩১ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

সিটিং নয়, চিটিং সার্ভিস

গণপরিবহন নৈরাজ্যের অবসান হোক

রাজধানীর বাসে সিটিং সার্ভিসের নামে চিটিং চলছে বেপরোয়াভাবে। প্রশাসনকে বশ করে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা যা-ইচ্ছা তাই করার স্বাধীনতা ভোগ করছেন- এমন অভিযোগ ওপেন সিক্রেট। সারা দেশে তো বটেই, এমনকি রাজধানীর সড়কেও অবাধে চলছে ফিটনেসবিহীন যানবাহন। লাইসেন্স নেই- এমন চালকরাও যানবাহন চালানোর সুযোগ পাচ্ছেন। এগুলো নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব যাদের তারা সবকিছু না দেখারই ভান করছেন। গণপরিবহনে সরকার-নির্ধারিত যাত্রীভাড়া পাত্তা পাচ্ছে না। সিটিং, ডাইরেক্ট, গেটলক ও স্পেশাল সার্ভিসের নামে চলছে নজিরবিহীন নৈরাজ্য। মোটরযান আইন, সরকার-নির্ধারিত ভাড়া সবকিছু উপেক্ষা করে হয়রানিতে লিপ্ত পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা। ফলে যাত্রীদের গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া। তাও কিলোমিটার হিসেবে নয়, পরিবহন মালিকদের ইচ্ছামতো চাপিয়ে দেওয়া। অল্প দূরত্বের যাত্রীকে গুনতে হচ্ছে পুরো পথের ভাড়া। রাজধানীসহ সারা দেশে গণপরিবহন চালকদের যথেচ্ছার শেষ নেই। হালকা যানের লাইসেন্স নিয়ে দূরপাল্লার গাড়ি চালাচ্ছেন এমন চালক অসংখ্য। দুর্ঘটনার নামে একের পর এক হত্যাকা- ঘটিয়েও তারা পার পেয়ে যাচ্ছেন পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের সম্পর্ক থাকায়। রাজধানীতে রিকশা, সিএনজি অটোরিকশা কিংবা প্রাইভেট কারকে হার মানিয়ে বাস-মিনিবাসের মতো গণপরিবহন যানজট সৃষ্টির প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যাত্রী নেওয়ার জন্য যেখানে সেখানে বাস থামিয়ে যানজট সৃষ্টি করা হয়। ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা সেদিকে নজর দেওয়ার কোনো চেষ্টাই করেন না। পরিবহন শ্রমিক বিশেষত বাসের ড্রাইভার, হেলপার, কন্ডাক্টররা প্রকাশ্যেই বলেন, তারা মোটা অঙ্কের চাঁদা দিয়ে গাড়ি চালান। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা নাজেহাল করলে তাদের চাঁদা পাওয়াই বন্ধ হবে। রাজধানীসহ সারা দেশে গণপরিবহনে যে নিয়ন্ত্রণহীন অবস্থা চলছে তাতে লাগাম পরাতে সরকারকে অবশ্যই কঠোর হতে হবে। পরিবহন মালিক ও শ্রমিক ইউনিয়নের কাছে প্রশাসনের জিম্মি হয়ে পড়া সরকারের জন্য কোনো সুখবর নয়। এ বিষয়ে কর্তাব্যক্তিদের কুম্ভকর্ণের ঘুম ভাঙবে- আমরা তেমনটিই দেখতে চাই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর