শিরোনাম
শুক্রবার, ২ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

নতুন মুদ্রানীতি

বেসরকারি ঋণ প্রবৃদ্ধি হ্রাস অপ্রত্যাশিত

বাংলাদেশ ব্যাংক চলতি অর্থবছরের মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে। নতুন মুদ্রানীতিতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রেখে ৮ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জনের অভিলাষ পূরণকে দৃশ্যত লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে রাখা হয়েছে। এ বিষয়টি প্রশংসার দাবিদার হলেও বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রাকে কমিয়ে আনা হয়েছে। এটা বিনিয়োগ ও ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য কতটা সহায়ক হবে তা একটি প্রশ্নবিদ্ধ বিষয়। নতুন মুদ্রানীতিতে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ ধরা হয়েছে ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ। এর মধ্যে ডিসেম্বর ২০১৯ পর্যন্ত লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৩ দশমিক ২ শতাংশ। গত অর্থবছরের জুন পর্যন্ত ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ছিল ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ। তবে ওই সময় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১১ দশমিক ৩০ শতাংশ। মুদ্রানীতিতে সরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ২৪ দশমিক ৩ শতাংশ; ডিসেম্বর পর্যন্ত যা হবে ২৫ দশমিক ২ শতাংশ। ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ঋণ প্রবৃদ্ধি ছিল ১৩ দশমিক ৪ শতাংশ ও জুন ২০১৯ পর্যন্ত ছিল ২১ দশমিক ১ শতাংশ। ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত সরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ছিল নেতিবাচক। দেশের ইতিহাসে এবারই প্রথম পুরো অর্থবছরের মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আগে ষাণ¥াসিক মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হতো। এখন থেকে বছরে একবারই মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির মুদ্রানীতি ঘোষণার সময় বলেছেন, মূল্যস্ফীতি ৫.৫০ শতাংশ পরিমিত রেখে ৮ দশমিক ২০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য মুদ্রানীতি আগের মতো সতর্কভাবে সংকুলানমুখী করা হয়েছে। নতুন মুদ্রানীতিতে উচ্চতর প্রবৃদ্ধি বজায় রাখা ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখার যে অভিলাষ ব্যক্ত করা হয়েছে তা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে ভয়াবহ বন্যায় ফসলহানি ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির কারণে। নতুন ভ্যাট আইন কার্যকরের ফলে বাজারে ইতিমধ্যে চাপ সৃষ্টি হয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা মূল্যস্ফীতিতে ইন্ধন জোগাতে পারে বলে আশঙ্কা সৃষ্টি করছে। চীন-মার্কিন বাণিজ্য যুদ্ধ এবং যুক্তরাজ্যের ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগও দেশের মুদ্রানীতির জন্য সম্ভাব্য হুমকি হয়ে দেখা দিতে পারে। মুদ্রানীতিতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখার যে সদিচ্ছা প্রকাশ পেয়েছে তা প্রশংসার দাবিদার। দেশবাসীর কাছে সরকারের গ্রহণযোগ্যতা জিইয়ে রাখার বিষয়টি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণাধীন থাকার ওপর নির্ভরশীল। ঋণ প্রবৃদ্ধি কমিয়ে আনা হলেও ঘোষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সরকার যথাসাধ্য চেষ্টা করবে আমরা এমনটিই দেখতে চাই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর