রবিবার, ৪ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

ট্রাম্পীয় হঠকারিতা

বিশ্বশান্তির জন্য হুমকি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অবশেষে নিজের জাত পরিচয়টাই বিশ্ববাসীকে জানিয়ে দিলেন। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান ও সোভিয়েত নেতা মিখাইল গরবাচেভের মধ্যে তিন দশক আগে স্বাক্ষরিত ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তিটি তুড়ি দিয়ে উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, এ চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্র আর নেই। দুই পরাশক্তির মধ্যে পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তি বিশ্বকে অস্ত্র প্রতিযোগিতার ব্যাট রেস থেকে কিছুটা হলেও রেহাই দিয়েছিল। আরেকটি মহাযুদ্ধ বা পারমাণবিক যুদ্ধের ঝুঁকি থেকেও বিশ্বকে রক্ষা করে এ চুক্তি। ১৯৮৭ সালে এই ঐতিহাসিক চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তিটির নাম ‘ইন্টারমিডিয়েট-রেঞ্জ নিউক্লিয়ার ফোর্সেস ট্রিটি’ বা আইএনএফ। রিগ্যান ও গর্বাচেভ স্বাক্ষরিত চুক্তিতে বলা হয়, কোনো দেশ এমন কোনো ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করতে পারবে না, যেটি ৫০০ থেকে ৫ হাজার ৫০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম হয়। কিন্তু গত অক্টোবর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অভিযোগ করে আসছেন, মস্কো পশ্চিমাদের নিশানা বানিয়ে নতুন মডেলের ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করেছে, যা ৫০০ থেকে ৫ হাজার ৫০০ কিলোমিটারের চেয়ে বেশি দূরত্ব অতিক্রম করতে সক্ষম। চলতি বছরের শুরুতেও একই অভিযোগ তোলে যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটো। তবে রাশিয়া বরাবরই এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। এ অবস্থায় শুক্রবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও চুক্তি থেকে সরে দাঁড়ানোর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছেন। ব্যাংককে আসিয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের এক সম্মেলনে তিনি বলেছেন, ‘চুক্তিটি এখন মৃত এবং এর জন্য রাশিয়া এককভাবে দায়ী।’ আইএনএফ চুক্তি সম্পাদনের সময় সোভিয়েত ইউনিয়ন ছিল বিশ্বের দুই পরাশক্তির একটি। তারপর সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে গেছে। সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রধান অংশ রাশিয়া সোভিয়েত আমলের শক্তিমত্তার কিছুটা ধারণ করলেও এখন বিশ্বে মূলত একক পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান অটুট। তবে আইএনএফ চুক্তি থেকে সরে আসা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য হঠকারী সিদ্ধান্ত বলে বিবেচিত হতে পারে। তিন দশক আগে চীন ছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে। এখন তারা রাশিয়াকে বন্ধু দেশ বলে মনে করে। চীন ও রাশিয়া একাট্টা হয়ে অবস্থান নিলে তা যুক্তরাষ্ট্রের  শুধু নয়, পশ্চিমা জোটের জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে;  যা কারোর জন্য স্বস্তিকর বলে বিবেচিত হবে না।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর