রবিবার, ৪ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

পর্যটন পরিবেদনা

বৈরী পরিবেশের অবসান ঘটুক

দুনিয়ার যেসব দেশ পর্যটনের ক্ষেত্রে পিছিয়ে বাংলাদেশ তার মধ্যে একটি। পর্যটনবান্ধব পরিবেশের অভাব এ দীনতার জন্য দায়ী। পর্যটন ক্ষেত্রে সামনের কাতারে অবস্থানের মতো মূলধন থাকা সত্ত্বেও দেশ পিছিয়ে থাকছে নানা সীমাবদ্ধতার কারণে। বাংলাদেশে রয়েছে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজার। রয়েছে সেন্ট মার্টিনস দ্বীপের মতো সৌন্দর্যের রানী প্রবাল দ্বীপ। নিঝুম দ্বীপও হতে পারে পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রভূমি। দেশের হাওর এলাকা পর্যটন আকর্ষণে ভূমিকা রাখতে পারে। বিশ্বের বৃহত্তম বাদাবন সুন্দরবন বাংলাদেশের অহংকারের অংশ। এ বনের রয়েল বেঙ্গল টাইগারের সুনাম বিশ্বজুড়ে। চিত্রল হরিণের তুলনা সে নিজেই। কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের দৃশ্য যে কাউকে মুগ্ধ করবে। দেশের তিন পার্বত্য জেলা বান্দরবান, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি পর্যটনের স্বর্গ হিসেবে বিবেচিত হওয়ার দাবি রাখে। দুটি পাতা একটি কুঁড়ির দেশ সিলেটের নয়নাভিয়াম পরিবেশে মুগ্ধ হতে বাধ্য যে কোনো পর্যটক। তার পরও বাংলাদেশ পিছিয়ে পর্যটনবান্ধব পরিবেশের অভাবে। বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৩৬টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১২৫তম। পর্যটনের বিকাশে ২০১০ সালে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড প্রতিষ্ঠা করা হলেও নয় বছরে পর্যটনকেন্দ্রিক কোনো দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেওয়া হয়নি। গত বছর বিশ্বের মোট জিডিপির ১০ দশমিক ৪ শতাংশ এসেছে ভ্রমণ ও পর্যটন খাত থেকে। এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে এ খাতের অবদান ছিল ২ হাজার ৯৩৯ বিলিয়ন ডলার যা অর্থনীতির ৯ দশমিক ৯ শতাংশ। পর্যটনে কর্মসংস্থান ছিল ১৭৯ দশমিক ৬ মিলিয়ন, যা মোট কর্মসংস্থানের ৯ দশমিক ৩ ভাগ। গত পাঁচ বছরে প্রতি পাঁচটি নতুন চাকরির একটি সৃষ্টি হয়েছে পর্যটন খাতে। এ অঞ্চলে ২০১৮ সালে বিদেশি পর্যটকরা খরচ করেছেন ৫২৯ বিলিয়ন ডলার যা পুরো রপ্তানি আয়ের ৬ দশমিক ৩ শতাংশ। পর্যটকদের ৮১ ভাগ ভ্রমণ করেন অবসর কাটাতে, বাকিরা ব্যবসায়িক কাজে। ২০১৮ সালের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০১৭ সালে বৈশ্বিক জিডিপির ১০ দশমিক ৪ শতাংশ এসেছে পর্যটন থেকে, যেখানে বাংলাদেশে এ খাতের অবদান ছিল ২ দশমিক ২ শতাংশ। এ অবস্থা কোনোভাবেই দেশের জন্য সম্মানজনক নয়। পর্যটন ক্ষেত্রে এগিয়ে যেতে হলে পর্যটনবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। বৈরী পরিবেশের অবসান ঘটাতে হবে নিজেদের স্বার্থেই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর