সোমবার, ৫ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ডেঙ্গু চর্চা

দায়িত্বশীলতার পরিচয় কাম্য

ডেঙ্গু দুনিয়া জুড়েই একটি আতঙ্কের নাম এবং স্বীকার করতেই হবে আমাদের দেশের প্রায় শতভাগ মানুষ এখন ডেঙ্গু আতঙ্কে ভুগছে। কর্তাব্যক্তিদের দায়হীন ভূমিকাও সাধারণ মানুষের অস্বস্তি ও আতঙ্ক বৃদ্ধিতে ইন্ধন জোগাচ্ছে। ডেঙ্গু সম্পর্কে স্বাস্থ্যমন্ত্রী যে বক্তব্য রেখেছেন তা দায় বোধের পরিচয় বহন করে কিনা প্রশ্ন উঠেছে। যে মুহূর্তে রাজধানীসহ দেশের মানুষ ডেঙ্গু আতঙ্কে ভুগছে সে মুহূর্তে মান্যবরের বক্তব্য ডেঙ্গুতে এ পর্যন্ত কতজন মারা গেছেন এর সঠিক কোনো তথ্য তার কাছে নেই। শনিবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেছেন এ সম্পর্কিত তথ্য খোঁজ-খবর নিয়ে পরে জানানো হবে। দেশের যিনি স্বাস্থ্যমন্ত্রী তিনি জনআতঙ্ক সৃষ্টিকারী একটি রোগে দেশের কত মানুষ আক্রান্ত হয়েছে আর কতজন মারা গেছেন এ সম্পর্কে তার কাছে সঠিক তথ্য নেই এমন কথা বলতে পারেন কি না প্রশ্ন উঠেছে। এমন বক্তব্য সরকারের জন্য বিব্রতকর বলে মনে করছেন বিশিষ্টজনরা। স্মর্তব্য, ডেঙ্গু পরিস্থিতি যখন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে তখন ২৭ জুলাই হঠাৎ করেই স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক মালয়েশিয়ায় যান। তার বিদেশ সফর নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় হলে ৩১ জুলাই রাতে দেশে ফিরে আসেন। পরদিন ১ আগস্ট ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তার বক্তব্য রাখার কথা থাকলেও সেটি স্থগিত করা হয়। তবে একই দিন দুপুরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে একজন সাংবাদিক তার বিদেশ সফর বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি ধমকের সুরে তাকে থামিয়ে দেন। কথায় বলে উট পাখির মতো বালুতে মুখ গুঁজে থাকলে মরু ঝড় এড়ানো যায় না। ডেঙ্গু এ মুহূর্তে জনস্বাস্থ্যের জন্য এক বড় চ্যালেঞ্জ। সন্দেহ নেই চ্যালেঞ্জটি সরকারের সুনামের জন্যও। ডেঙ্গু প্রতিরোধে সরকার তৎপর ভূমিকা রাখছে দেশবাসী এমনটিই দেখতে চায়। ডেঙ্গুতে কত লোক আক্রান্ত হয়েছে কতজন প্রাণ হারিয়েছে এ তথ্য সরকারি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে সংগ্রহ করে যে কোনো মুহূর্তে বলা সম্ভব। দেশবাসী যখন ডেঙ্গু নিয়ে উৎকণ্ঠায় তখন স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সপরিবারে বিদেশ ভ্রমণ আর যাই হোক দায়িত্বশীলতার পরিচয় নয়। আমরা আশা করব দেশবাসীর মধ্যে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে মন্ত্রী মহোদয়সহ স্বাস্থ্য প্রশাসন সক্রিয় হয়ে উঠবে। এটি তাদের কর্তব্য বলে বিবেচিত হওয়া উচিত।

সর্বশেষ খবর