সোমবার, ৫ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

বিমানের চোরেরা বিপাকে

তদন্ত যেন চোরাগলিতে থেমে না যায়

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস এবং সিভিল এভিয়েশনের কর্তাব্যক্তিদের একাংশ শুরু থেকে সরকারি এই দুই প্রতিষ্ঠানকে এলোমেলো করে দে মা লুটেপুটে খাই এর অভয়ারণ্যে পরিণত করেছেন। দেশবাসীর ট্যাক্সের টাকার শ্রাদ্ধ করা দুই প্রতিষ্ঠানের ঐতিহ্য বলেও বিবেচিত। দেরিতে হলেও এ ব্যাপারে সরকারের সম্বিত ফিরেছে এবং বিমান ও সিভিল এভিয়েশনের লুটেরাদের বিরুদ্ধে দুদকসহ বিভিন্ন সংস্থা সক্রিয় হয়ে উঠেছে। আরব্য উপন্যাসের থিপ অব বাগদাদের বাংলাদেশি সংস্করণের অন্তত ২০০ কর্মকর্তা এখন দুদকের নজরদারিতে। চোর মহাচোর ও লুটেরাদের শীর্ষ ১০ জনের দেশত্যাগেও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। বিমান ক্রয় ও লিজ, রক্ষণাবেক্ষণ, টিকিট বিক্রি, কার্গো এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট, ক্যাটারিংসহ নানা খাতে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে ওই সব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর তথ্য-উপাত্ত পেয়েছে দুদক। সুনির্দিষ্ট তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে পর্যায়ক্রমে সংশ্লিষ্টদের দুদকে তলব করা হচ্ছে। বিমানের যেসব কর্মকর্তার বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে তার মধ্যে এ সংস্থার সদ্য বিদায়ী ব্যবস্থাপনা পরিচালকও রয়েছেন। ইতিমধ্যে বিমানের সাবেক এমডিসহ চার কর্মকর্তাকে দুদক জেরা করেছে। ক্ষমতার অপব্যবহার, ঘুষ-দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে পাইলট নিয়োগসহ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে বিমানের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। সিভিল এভিয়েশনের সবচেয়ে বেশি দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে শাহজালাল, শাহ আমানত, সিলেট ওসমানী ও কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পাঁচ প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত একজন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে। দুদক এ পাঁচ প্রকল্পের ফাইল তলব করেছে। বিমান ও সিভিল এভিয়েশন এমনই দুই প্রতিষ্ঠান চোর বাছতে গেলে কম্বলের প্রায় সব পশমই শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। বিশেষত বিমানের কর্তাব্যক্তিদের পাশাপাশি কর্মীদের অনেকে সোনা ও মাদক চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত এমন অভিযোগও ওপেন সিক্রেট। আমরা আশা করব বিমান ও সিভিল এভিয়েশনের চোর ও লুটেরাদের বিরুদ্ধে যে তদন্ত চলছে তা আপসের চোরাগলিতে থেমে যাবে না। লুটেরাদের শাস্তিদানে দুদক দৃঢ় সংকল্পবদ্ধতার পরিচয় দেবে এমনটিই প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর