বুধবার, ৭ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

কাশ্মীরের স্বতন্ত্র সত্তার অবসান

বিভেদকামীদের লাভবান করবে

ভারতের কাশ্মীর রাজ্যকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয়েছিল সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদে। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্তির ফলে ভারত ও পাকিস্তান স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। হিন্দু অধ্যুষিত এলাকায় ভারত ও মুসলিম অধ্যুষিত এলাকাকে নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় পাকিস্তান। ভারত বিভক্তির সময় দেশীয় রাজ্যগুলোকে তাদের স্বাধীন সত্তা বজায় রাখা কিংবা নিজেদের ইচ্ছানুযায়ী ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার অধিকার দেওয়া হয়। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মীরের সে সময়কার দেশীয় রাজা তার দেশের স্বাধীন অস্তিত্ব বজায় রাখার সিদ্ধান্ত নেন। কাশ্মীরের অবিসংবাদিত নেতা শেখ আবদুল্লাহও ছিলেন আলাদা সত্তা বজায় রাখার দৃঢ় সমর্থক। ভারত বিভক্তির পরপরই পাকিস্তান উপজাতীয় মিলিশিয়াদের অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে কাশ্মীরের একাংশ দখল করে নেয়। এ অবস্থায় বিপাকে পড়ে কাশ্মীরের স্বাধীন সত্তা। অস্তিত্বের গভীর সংকটের মুখে কাশ্মীরের ডোগরা রাজা শর্তসাপেক্ষে ভারতে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। শেরে কাশ্মীর শেখ আবদুল্লাহও ছিলেন কাশ্মীরের ভারতে যোগদানের পক্ষে। ভারতের সঙ্গে যোগদানের শর্ত হিসেবে কাশ্মীরের আলাদা বৈশিষ্ট্য বজায় রাখার বিষয়টি গুরুত্ব পায়। পররাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা ও অর্থ ছাড়া অন্য সব ব্যাপারে কাশ্মীর ছিল সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকারী। এত দিন ৩৭০ অনুচ্ছেদের সুবাদে কাশ্মীরের স্থায়ী বাসিন্দারাই শুধু সেখানে বৈধভাবে জমি কিনতে ও সরকারি চাকরি করার সুযোগ পেতেন এবং সেখানে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারতেন। এ  অনুচ্ছেদের সুবাদে এত দিন জম্মু ও কাশ্মীরের নিজস্ব সংবিধান ও একটি আলাদা পতাকার স্বাধীনতা দেওয়া ছিল। পররাষ্ট্র, অর্থ ও প্রতিরক্ষার বিষয়টি এত দিন কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে থাকলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব ছিল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর হাতে। নতুন ব্যবস্থায় রাজ্যটিতে কেন্দ্রের সরাসরি শাসনের প্রস্তাব রাখা হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতিনিধি হিসেবে রাজ্যটি পরিচালনা করবেন একজন লেফটেন্যান্ট গভর্নর। জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্য ভেঙে জম্মু কাশ্মীর ও লাদাখ নামের দুই রাজ্য সৃষ্টির সিদ্ধান্ত কাশ্মীরের জনমনে দ্রোহের যে আগুন জ্বলছে দীর্ঘদিন ধরে, তা আরও উসকে দিতে পারে-  এমন আশঙ্কা সৃষ্টি করেছে। কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদীরা হালে পানি পেতে পারে

বিজেপি সরকারের একতরফা সিদ্ধান্তে। উপমহাদেশের  স্থিতিশীলতার জন্য ডেকে আনতে পারে বিপদ।

সর্বশেষ খবর