বৃহস্পতিবার, ৮ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

ভয়াবহ নদী ভাঙন

নদীর তীর রক্ষার উদ্যোগ নিন

বন্যার পর বানভাসি মানুষের জন্য মরণকামড় হয়ে দাঁড়িয়েছে নদী ভাঙন। বন্যায় ফসল, বাড়িঘর-স্থাপনার ক্ষতি হয় কিন্তু সর্বস্ব হারানোর শঙ্কা দেখা দেয় না। কিন্তু নদী ভাঙন মুহূর্তেই সম্পন্ন গৃহস্থকে ফকির বানিয়ে দেয়। বলা হয়, প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে সবচেয়ে সর্বনাশা হলো নদী ভাঙন। প্রতি বছরের মতো এ বছরও বন্যার পানি কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙনে বিলীন হচ্ছে নদ-নদী তীরবর্তী বিস্তীর্ণ জনপদ। ভাঙন আতঙ্কে ভিটেমাটি ফেলে নিরাপদ আশ্রয়ে অবস্থান নিয়েছেন বানভাসিরা। নওগাঁ ও সিরাজগঞ্জে যমুনা এবং রংপুরে তিস্তার ভাঙন নতুন করে শুরু হয়েছে। ভাঙন রোধে এলাকায় জরুরি ভিত্তিতে কাজ শুরু করেছে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। সিরাজগঞ্জে যমুনার পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে দেখা দিয়েছে ভাঙন। ভাঙনে বিলীন হচ্ছে বসতভিটা, ফসলি জমি। তিন সপ্তাহের বন্যায় ২ শতাধিক বসতভিটা ও বিপুল পরিমাণ ফসলি জমি বিলীন হয়ে গেছে। বিশেষ করে চৌহালী উপজেলার খাসপুকুরিয়ায় তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। বন্যার পর তিস্তায় দেখা দিয়েছে ভাঙন। ভাঙন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। গত ১০ দিনে রংপুরের তিন উপজেলায় অর্ধশত ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। তিস্তার ভাঙনে হারিয়ে যাচ্ছে বসতবাড়ি, আবাদি জমিসহ নানা স্থাপনা। বাঁধ দিয়ে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করেও তেমন কাজে আসছে না। প্রতি বছরই বন্যার পর ভাঙন শুরু হয় তিস্তার রংপুর অংশে। ভাঙনের ফলে জেলার গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া ও পীরগাছা এলাকায় সর্বস্বান্ত হয়েছে কয়েক লাখ মানুষ। নদী ভাঙন এযাবৎ দেশের অন্তত ১৫ লাখ মানুষকে রাস্তায় নামিয়েছে। একসময় যাদের ঘরবাড়ি সব ছিল তারা সর্বহারায় পরিণত হয়েছে নদী ভাঙনের অভিশাপে। নদী ভাঙন রোধে প্রতি বছরই বাঁধ নির্মাণে শত শত কোটি টাকা ব্যয় হয়। কিন্তু ব্যয় করা অর্থের সিংহভাগই আত্মসাৎ হয় পানি উন্নয়ন বার্ডের লুটেরা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কারসাজিতে। ফলে নদী ভাঙন রোধে যে বাঁধ নির্মাণ করা হয় তার অস্তিত্ব বালির বাঁধের মতো ধসে পড়ে। নদী ভাঙন রোধে নদ-নদীর পানি ধারণ ক্ষমতা বাড়াতে হবে। নদীতীরের অধিবাসীদের সরাসরি অংশগ্রহণের ভিত্তিতে বাঁধ নির্মাণের ব্যবস্থা করতে হবে। সামাজিকভাবে নদীর তীর সুরক্ষায় বাঁধ নির্মাণ করা গেলে প্রতি বছর এ খাতে যে কোটি কোটি টাকা অপচয় হচ্ছে তা রোধ করা সম্ভব হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর