বৃহস্পতিবার, ৮ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

ঢাবির ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি

দোষীদের বহিষ্কার সঠিক পদক্ষেপ

দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে একসময় বলা হতো প্রাচ্যের অক্সফোর্ড। কিন্তু নানা অব্যবস্থাপনায় এ অভিধা এখন কানা ছেলের পদ্মলোচন নামে পরিণত হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় জাল-জালিয়াতির কারণে সত্যিকারের যোগ্যদের বদলে অযোগ্যরা অনেক ক্ষেত্রে সুযোগ পাচ্ছে। ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে চলে লাখ লাখ টাকার হাতবদল। বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখে চুলকানি লাগানোর উপক্রম করেছে এ দুর্নীতির ঘটনা। হতাশার ভিতর আশার কথা হলো, ভর্তি পরীক্ষার দুর্নীতির কুশীলবদের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ কঠোর মনোভাব গ্রহণ করেছে। জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েছে তাদের বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ গ্রহণের প্রক্রিয়া। এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস ও জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৯ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বোর্ডের এক সভায় বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কৃত ৬৯ জনকে অভিযোগের বিষয়ে কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠিয়ে এক সপ্তাহের মধ্যে জবাব দিতে বলা হবে। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট তাদের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। উল্লেখ্য, ২০১২-১৩ থেকে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত জালিয়াতির মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন এসব শিক্ষার্থী। তারা সবাই পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আভাস দেওয়া হয়েছে, আরও অনেক শিক্ষার্থীর বিষয়ে খোঁজখবর চলছে। জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ভর্তির অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। উল্লেখ্য, পুলিশি তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে তাদের প্রত্যেককে কয়েক লাখ টাকা তুলে দিতে হয়েছে জালিয়াত চক্রের হাতে। ২০১৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস ও জালিয়াতির ঘটনা তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ বা সিআইডিকে। চলতি বছরের ২৩ জুন ৮৭ শিক্ষার্থীসহ ১২৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির পথ বন্ধে সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যে কঠোর মনোভাব নিয়েছে তা প্রশংসার দাবিদার।

সর্বশেষ খবর