বাংলাদেশ-ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে দুই দেশের সীমান্তকে মৈত্রীর সীমান্তে পরিণত করার ব্যাপারে ঐকমত্য হয়েছে। দিল্লিতে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বৈঠকে উভয় দেশের মধ্যে কানেকটিভিটি বৃদ্ধিসহ জনতার সঙ্গে জনতার সম্পর্ক বাড়ানোর জন্য ভিসাব্যবস্থা আরও সরলীকরণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বৈঠকে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর জন্য ভারত উদ্যোগ নেবে বলে আশ্বাস দেন। বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় নিরাপত্তা সহযোগিতার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে হৃদ্যতাপূর্ণ পরিবেশে। উভয় দেশ একমত হয়েছে অপরাধমূলক কার্যকলাপ রুখে সীমান্তকে নিরাপদ অঞ্চল করার ব্যাপাবে। ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ভারতবিরোধী শক্তিকে প্রশ্রয় না দেওয়ার নীতির প্রশংসা করেছেন। উভয় দেশের সীমান্ত ব্যবস্থাপনায় বর্তমানে সহযোগিতাপূর্ণ যে পরিবেশ রয়েছে, তাতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে সীমান্তকে মৈত্রীর সীমান্তে রূপান্তরিত করার জন্য একমত হয়েছে দুই দেশ। বৈঠক শেষে প্রকাশিত যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, ভারত-বাংলাদেশ আজ যে সম্পর্ক তা বিশ্বের কাছে রোল মডেল। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের সপ্তম বৈঠক এমন এক সময় অনুষ্ঠিত হলো যখন কাশ্মীর নিয়ে ভারত যেমন অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সংকটে ভুগছে তেমন প্রতিবেশী পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তকে মৈত্রী সীমান্তে পরিণত করার অঙ্গীকার খুবই তাৎপর্যের। ভারতের ক্ষমতাসীন সরকারের দ্বিতীয় ক্ষমতাধর ব্যক্তি বলে পরিচিত অমিত শাহের সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের এটি প্রথম বৈঠক। বৈঠকে দুই দেশের মৈত্রীকে জনতার মৈত্রীতে পরিণত করার জন্য চিকিৎসা ও বাণিজ্যিক ভিসা সহজীকরণের সে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তাতে বাংলাদেশের মানুষের ভিসাসংক্রান্ত জটিলতা কিছুটা হলেও কমবে বলে আশা করা যায়। বৈঠকে রোহিঙ্গাদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে ভারত উদ্যোগ নেবে বলে যে আশ্বাস দিয়েছে তা অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার। গত দুই বছর ধরে আমাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু দেশের পক্ষ থেকে এ আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে, এবার তা বাস্তবায়নের পর্যায়ে যাবে- আমরা এমনটিই দেখতে চাই।