শুক্রবার, ৯ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

জুমার দিনের মর্যাদা

মাওলানা রফিক আহমদ ওসমানী

জুমার দিন মুসলমানদের জন্য সাপ্তাহিক ঈদের দিন। একই সঙ্গে এটি দিনগুলোর মধ্যে শ্রেষ্ঠ দিন। ইবনে মাজায় বর্ণিত হাদিসে রসলুল্ল­াহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘নিঃসন্দেহে জুমার দিন সেরা দিন ও আল্ল­াহর কাছে সর্বোত্তম দিন। আল্লাহর কাছে তা ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতরের দিনের চেয়েও উত্তম।’ আর মুসলিমের হাদিসে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যেসব দিনে সূর্য উদিত হয় তার মধ্যে সর্বোত্তম হলো জুমার দিন। এ দিন আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করা হয়েছে এবং এ দিনেই তাঁকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছে। আবার এ দিনেই জান্নাত থেকে তাঁকে বের করা হয়েছে। যেদিন কিয়ামত হবে সে দিনটিও হবে জুমার দিন।’

সাপ্তাহিক ঈদ হিসেবে জুমার দিনের ফজিলত অনেক। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘জুমার দিনে ফেরেশতারা মসজিদের প্রতিটি দরজায় দাঁড়িয়ে যায়। তারা মসজিদে আগমনকারী মুসল্লিদের নাম পর্যায়ক্রমে লিপিবদ্ধ করতে থাকে। অতঃপর যখন ইমাম এসে যায়, তখন তারা রেজিস্টার বন্ধ করে খুতবা শুনতে থাকে। যে সবার আগে মসজিদে প্রবেশ করে সে একটি উট আল্লাহর রাস্তায় দান করার সওয়াব লাভ করে। যে দুই নম্বরে প্রবেশ করে সে একটি গরু আল্লাহর রাস্তায় দান করার সওয়াব পায়। যে তিন নম্বরে প্রবেশ করে সে একটি দুম্বা দান করার সওয়াব পায়। যে চার নম্বরে প্রবেশ করে সে একটি মুরগি দান করার সওয়াব লাভ করে। আর যে পাঁচ নম্বরে প্রবেশ করে সে একটি ডিম আল্লাহর রাস্তায় দান করার সওয়াব পায়অ’ বুখারি, মুসলিম, ইমাম শাফি।

হজরত সালমান (রা.) থেকে একটি হাদিসে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিনে উত্তমরূপে গোসল করবে, অতঃপর তেল ব্যবহার করবে এবং সুগন্ধি মাখবে; তারপর মসজিদে গমন করবে, দুই মুসল্লি­র মাঝে জোর করে জায়গা নেবে না; সে নামাজ আদায় করবে এবং ইমাম যখন খুতবা দেবে, সে চুপ করে মনোযোগসহকারে খুতবা শুনবে; এ আমলের পুরস্কারস্বরূপ দুই জুমার মধ্যবর্তী সময়ে তার সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।’ আবু দাউদ।

জুমাবারের ফজিলতের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিকটি হলো, এ দিনে এমন একটা সময় আছে, যখন মুমিন বান্দা কোনো দোয়া করলে আল্লাহ তার দোয়া কবুল করেন। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। রসুলুল্ল­াহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘জুমার দিনে এমন একটি সময় আছে, যে সময়ে কোনো মুমিন বান্দা আল্ল­াহর কাছে ভালো কোনো কিছু দোয়া করলে, অবশ্যই আল্লাহ তাকে তা দান করবেন।’ মুসলিম, মুসনাদে আহমাদ।

জুমার দিনে দোয়া কবুল হওয়ার সেই মহামূল্যবান সময় কোনটি- এ সম্পর্কে আলেমদের ৪৫টি মত পাওয়া যায়। তবে সবচেয়ে প্রসিদ্ধ মত হলো, আসর থেকে মাগরিব। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘জুমার দিনের কাক্সিক্ষত সময়টি হলো আসরের পর থেকে সূর্যাস্তের আগ পর্যন্ত।’ মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা, তিরমিজি।

লেখক : খতিব, হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর আবাসিক এলাকা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, কুর্মিটোলা, ঢাকা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর